পেয়ারা পাতা দিয়ে রূপচর্চা করার মাধ্যমে রাতারাতি ফর্সা হয়

 পেয়ারা পাতা দিয়ে রূপচর্চা, আপনি কি জানেন ত্বকের যত্নে পেয়ারা পাতার ব্যবহার করার নিয়ম সম্পর্কে। পেয়ারা পাতায় অনেক গুনাগুন আছে যা শুধু রূপচর্চা নয় চুলের যত্নেও বিশেষ উপকারী। 

পেয়ারা-পাতা-দিয়ে-রূপচর্চার

এছাড়াও পেয়ারা পাতা ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।আরো জানতে পারবেন পেয়ারা পাতা খেলে কি জন্য কমে? এলার্জিতে পেয়ারা পাতার ব্যবহার।। তাহলে জেনে নেয়া যাক পেয়ারা পাতা দিয়ে কিভাবে ত্বকের যত্ন নেই সেসব সম্পর্কে। 

সূচিপত্রঃ পেয়ারা পাতা দিয়ে রূপচর্চা  মাধ্যম সমূহ

পেয়ারা পাতা দিয়ে রূপচর্চা

পেয়ারা পাতা দিয়ে রূপচর্চা, আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন কিভাবে পেয়ারা পাতা ব্যবহার করা হয় রূপচর্চায়। পেয়ারা পাতা একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা রূপচর্চায় ব্যবহার করা হয়। এই পাতা ত্বকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে আর, ব্রণ ও দাগ কমাতে সহায়তা করে। পেয়ারা পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকে ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পেয়ারা পাতা চুলে যত্নে ব্যবহার করা হয় এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে।  

আরো জানতে পারবেন খালি পেটে পেয়ারা পাতা খেলে কি হয় আর এলার্জিতে পেয়ারা পাতার ব্যবহার সম্পর্কে। কার সাথে আর জানতে পারবেন পেয়ারা পাতার অপকারিতাসহ এবং কাদের পেয়ারা পাতার চা খাওয়া উচিত এবং কাদের উচিত নয় সেসব সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে জেনে নেয়া যাক ত্বকে যত্নে পেয়ারা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।

ত্বকে যত্নে পেয়ারা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে

  • বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে
  • তৈলাক্ত ভাব কমাতে সাহায্য করে
  • জ্বালাপোড়া ভাব দূর করতে সাহায্য করে
  • ব্রণ ও ব্ল্যাকহেড দূর করতে সহায়তা করে

বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করেঃ অনেক মেয়েদেরই অল্প বয়সে মুখে বয়সে ছাপ পড়তে করতে শুরু করে। তাই বয়সে ছাপ দূর করতে এবং ত্বককে টানটান ভাব ধরে রাখতে পেয়ারা পাতা অনেকটা কার্যকরী। এই পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ব্যাডিকালকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। আপনার ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক করে বলে গবেষণায় জানা গেছে এ ধরনের ক্ষতিকারক উপাদান। তাই আপনি টকের বলি দেখা দূর করতে এবং ত্বকের জিল্লা রাতে পেয়ারা পাতা জুড়ে মেলা ভার। তাই এসব সমস্যা থেকে বা ত্বকের বয়সে ছাপ কমাতে নিয়মিত পেয়ারা পাতা বেটে পেস্ট করে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। 

আরো পড়ুনঃ আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

তৈলাক্ত ভাব কমাতে সাহায্য করেঃ তৈলাক্ত ভাব কমাতে আপনি দশটি পাতা অল্প একটু পানিতে নিয়ে পেস্ট করে নিন। এরপরে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে তারপরে এই পেস্টটি মুখে ভালোভাবে দেখে নিন। ৩০ মিনিট পরে মুখ ভালো হবে ধুয়ে ফেলুন। এই পেজটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের তোলাতে ভাব কমাতে সাহায্য করে।

জ্বালাপোড়া ভাব দূর করতে সাহায্য করেঃ জ্বালাপোড়া ধার কমাতে আপনি ১৫ থেকে বৃষ্টি পেয়ারা পাতা নিয়ে এক কাপ পানি ছাতে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এরপরে চুলা হতে নামিয়ে ঠান্ডা করে বোতলে রাখুন এবং এই পানি মুখে স্প্রে করে মশার কামড়ানো দাগ আর ত্বকের জ্বালাপোড়া ভাব কমে যেতে সাহায্য করে। 

ব্রণ ও ব্ল্যাকহেড দূর করতে সহায়তা করেঃ ব্রণ ও ব্ল্যাকহেড দূর করতে আপনি দশটি পেয়ারা পাতা অল্প পানির সাথে নিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। আর এ পেস্ট এর সাথে ১ টেবিল চামচ এলোভেরা জেল, ১ টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়া একসাথে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন এবং ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত দুই তিন দিন ব্যবহারের ফলে দেখতে পাবেন আপনার মুখের ব্রণ ব্ল্যাকহেড কমতে শুরু করেছে। 

চুলের যত্নে পেয়ারা পাতা

অনেকে কমবেশি চুল পড়া নিয়ে সমস্যায় থাকে। পেয়ার পাতায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন বি থাকে যা চুলের স্বাস্থ্যকর এর জন্য খুব উপকারী। পেয়ারা পাতার ভূমিকা অনেক যা চুল পড়া রোধ করে এবং গজাতে সাহায্য করে। গবেষকরা মনে করেন চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং চুল পড়া রোধ ও নিয়মিত পেয়ারা পাতা  ব্যবহার করলে চুলের সমস্যা গুলো দূর করতে সাহায্য করে।

চুলে ব্যবহারের জন্য এক মুঠ পেয়ারা পাতা ভালোভাবে ধুয়ে দুই কাপ পানির সাথে মিশিয়ে বিশ মিনিট হালকা জাল করতে হবে যতক্ষণ না এই পানি লাল হয়ে আসছে ততক্ষণ জাল করতে হবে। পানি লাল হয়ে গেলে জাল বন্ধ করে দিন এবং মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে কাঁচের বোতলে রেখে দিন। আপনি এই পানি টনিকের মত করে নিয়মিত চুলের গোড়ায় ব্যবহার করুণ। আপনি এই পেয়ারা পাতার রস নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এবং চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে। 

পেয়ারা পাতার পুষ্টিগুণ

পেয়ারা পাতার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে চান অনেকে। পেয়ারা পাতার পুষ্টি উপাদান এবং গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। পেয়ারা পাতায় পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তাহলে জেনে নেয়া যায় পেয়ারা পাতার ১০০ গ্রামে কি পরিমান কষ্ট উপাদান।

  • ৪১৭ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম
  • ৪০ মিলিগ্রাম ফসফরাস 
  • ১৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম 
  • ১৩.৫০ মিলিগ্রাম আইরন 
  • ২.৫৫ গ্রাম প্রোটিন
  • ০.১১ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি
  • ১৪.৩২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট
  • 22 মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম 
  • ২২৮.৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি

পেয়ারা পাতার বিশেষ উপকারিতা

স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী পেয়ারা পাতা এ কথা আমরা সকলেই কম বেশি জানি। স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী পেয়ারা পাতা তা জানলে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। পেয়ারা পাতাকে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করেছেন গবেষকরা। প্রচুর পরিমাণে উপাদান রয়েছে পেয়ারা পাতায় যা স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাহলে জেনে নেয়া যাক পেয়ারা পাতার বিশেষ উপকারিতা সমূহ।

  • চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে 
  • ত্বকের যত্নে
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
  • কোলেস্টের কমাতে সাহায্য করে
  • দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • শুক্রাণু সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে
  • কফ ও ব্রংকাইটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে
  • ডায়রিয়ার জন্য উপকারী
  • হজম শক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে
  • দাঁতের ব্যথা কমায়
  • ব্যাকটেরিয়া ও ফাংগাসের আক্রমণ থেকে বাঁচায়

চুল পড়া কমাতে সাহায্য করেঃ অনেকে কমবেশি চুল পড়া নিয়ে সমস্যায় থাকে। পেয়ার পাতায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন বি থাকে যা চুলের স্বাস্থ্যকর এর জন্য খুব উপকারী। পেয়ারা পাতার ভূমিকা অনেক যা চুল পড়া রোধ করে এবং গজাতে সাহায্য করে। গবেষকরা মনে করেন চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং চুল পড়া রোধ ও নিয়মিত পেয়ারা পাতা  ব্যবহার করলে চুলের সমস্যা গুলো দূর করতে সাহায্য করে।

ত্বকের যত্নেঃ প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে পেয়ারা পাতায়। ত্বকের যত্নে বেস কার্যকরী উপাদান। ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করতে এবং তাকে দাগ দূর করতে সাহায্য করে পেয়ারা পাতা

আরো পড়ুনঃ মেথি ও কালোজিরা দিয়ে চুলের যত্ন

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম ও ফাইবার রয়েছে পেয়ারা পাতায় যা উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। আপনি যদি নিয়মিত পেয়ারা পাতার রস খান তাহলে আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

কোলেস্টের কমাতে সাহায্য করেঃ পেয়ারা পাতা আমাদের জন্য কার্যকর একটি উপাদান। যা শরীরের খারাপ কলেস্টর অপসারণ করে ভালো কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে পেয়ারা পাতা অনেক কার্যকরী উপাদান। সবার বয়স বাড়ার পাশাপাশি চোখের সমস্যা দেয়। এছাড়াও চোখে ছানি পড়া, চোখে ঝাপসা দেখা। পেয়ারা পাতায় রয়েছে এন্টি এক্সিডেন্ট এবং উচ্চমানের ভিটামিন যার দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করেঃ প্রাকৃতিক লেকজেটিক উপাদান রয়েছে পেয়ারা পাতায়। পেয়ারা পাতার উপাদান পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পেয়ারা পাতার রস নিয়মিত খেলে সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করেঃ প্রচুর পরিমাণে ফিনোলিক রয়েছে পেয়ারা পাতায় যা শরীরের রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। পেয়ারা পাতা প্রতিদিন চিবিয়ে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করেঃ প্রচুর পরিমাণে লাইকপেন, পলিফেলন আর কোয়ারকেটিন ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের শরীরের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে।ক্যান্সার হওয়া ঝুঁটির হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে সাহায্য করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ আপনারা যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে ভাবছেন বা ওজন কমাতে পারছেন না তাদের জন্য পেয়ারা পাতায় একটি কার্যকরী উপাদান। আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে পেয়ারা পাতার রস খাওয়ার মাধ্যমে বা পেয়ারা পাতা নিয়মিত চিবিয়ে খেলে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে পেয়ারা পাতা। এই পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। যার ফলে শরীরের নানা রকম রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

শুক্রাণু সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করেঃ স্পার্ম কাউন্ট উন্নত করতে সাহায্য করে পেয়ারা পাতা। চিকিৎসকরা মনে করেন এর পাশাপাশি পেয়ারা পাতা উর্বরতা বাড়াতে সক্ষম। শুক্রাণুর বিষাক্ততার উপর উপকারী প্রভাব ফেলে যা একজন পুরুষের  উর্বরতা উন্নত করতে সাহায্য করে পেয়ারা পাতার উপস্থিত থাকা এন্টিক অক্সিডেন্ট এর বৈশিষ্ট্য।

কফ ও ব্রংকাইটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করেঃ পেয়ারা পাতার চা ভালো কার্যকরী ভূমিকা পালন করে কফ ও ব্রংকাইটিস নিয়ন্ত্রণ করতে। আপনার যদি এ রোগ হয় তাহলে পেয়ারা পাতার চা আপনার জন্য অনেক উপকারে আসবে।

ডায়রিয়ার জন্য উপকারীঃ ডায়রিয়া সমস্যা সমাধানের জন্য আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা প্রত্যেক মানুষকে পেয়ারা পাতা চা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 

হজম শক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করেঃ হজম শক্তি ভালো রাখতে পেয়ারা পাতার রস প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে নানা রকম সমস্যা সমাধান হয়। পেয়ারা পাতা হজম শক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

দাঁতের ব্যথা কমায়ঃ পেয়ারা পাতাকে বলা হয় দাঁতের ব্যথা কমাতে। প্রচুর পরিমাণে পেয়ারা পাতার রয়েছে ইনফ্লোমেটরি উপাদান। যা দাঁতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। যাদের দাঁতের ব্যথার সমস্যা রয়েছে তারা কয়েকটি কচি কচি পেয়ারা পাতা নিয়ে দাঁতের উপরে রেখে আস্তে আস্তে টিভিতে থাকুন তাহলে দেখবেন দাঁতের ব্যথা দূর হয়ে গেছে। আর যদি বেশি হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। 

ব্যাকটেরিয়া ও ফাংগাসের আক্রমণ থেকে বাঁচায়ঃ পেয়ারা পাতা এমন আকটি উপাদান যা ব্যাকটেরিয়া ও ফাংগাসের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। আর আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

খালি পেটে পেয়ারা পাতা খেলে কি হয়?

অনেক উপকারী একটি উপাদান হচ্ছে পেয়ারা পাতা। পেয়ারা পাতা প্রতিদিন সকালে খেলে অনেক অসুখ থেকে মুক্তি মিলে। সকালে খালি পেটে পেয়ারা পাতা কয়েকটি চিবিয়ে খেলে যাদের হজমের সমস্যা আছে এ সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। পেয়ারা পাতা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে চিবিয়ে খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজম সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

পেয়ারা পাতা পেট ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এর সাথে ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি ওজন সমস্যায় ভুগেন তাহলে প্রতিদিন সকালে কয়েকটি পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খান। আর যাদের ডায়াবেটিস অসুখ রয়েছে তারা প্রতিদিন সকালে পেয়ারা পাতার রস খাওয়া বেশস উপকারিতা। শরীর সুস্থ রাখতে পেয়ারা পাতা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পেয়ারা পাতা খেলে কি ওজন কমে?

খুব কম মানুষই আছেন আজকাল যারা সম্পূর্ণ ফিট, ওজনের কারণে বেশিরভাগ মানুষ নানা রকম সমস্যার শিকার হন। এর কারণ হচ্ছে দুর্বল জীবন যাপন খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার কারণে মানুষের ওজন দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। সবাই ওজন কমাতে চাই এমন পরিস্থিতিতে তার জন্য কেউ জিমে যায় আবার কেউ বাড়িতে ব্যায়াম করে। কিন্তু এগুলোর মাধ্যমে ওজন কমানো সম্ভব না তাই ওজন কমানোর জন্য ডায়েট করাটা খুব জরুরী।

ওজন কমানোর জন্য মানুষ ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন। ওজন কমানো কোন কঠিন কাজ থেকে কম মনে হয় না, এমন পরিস্থিতিতে। তাই আপনাদের এই সমস্যা সমাধান করতে শুধুমাত্র পেয়ারা পাতা অনেক উপকারে উপাদান। পেয়ারা পাতা শুধু ওজন কমানোর জন্য সাহায্য করে এমনটা নয় আরো অনেক রকম সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এটাই প্রমাণিত।

পেয়ারা পাতার চা দিনে কতবার খাওয়া উচিত?

সাধারণত দিনে ১-২ বার পান করা যেতে পারে পেয়ারা পাতার চা। পেয়ারা পাতার চা পান করার মাধ্যমে আমাদের অনেক উপকার হয়ে থাকে। পেয়ারা পাতার চা রক্তে সরকারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে ওজন কমাতে সাহায্য করে হাজমে সহায়তা করে ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।

তবে পেয়ারা পাতা চা পানের আগে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। তা হচ্ছে স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে চা পানের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আর অতিরিক্ত চা পান করা কারো উচিত নয়। এছাড়াও গর্ব অবস্থায় পান করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় পেয়ারা পাতার চা পান করার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

পেয়ারা পাতার চা কাদের খাওয়া উচিত নয়? 

সাধারণত নিরাপদ পেয়ারা পাতক চা, তবে কিছু ক্ষেত্রে বা কিছু মানুষের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে।যেমন ধরেন যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে এবং বমি বমি ভাব হয় তাদের পেয়ারা পাতা চা খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও গর্ব অবস্থায় পান করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় পেয়ারা পাতার চা পান করার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

আজাদের ডায়াবেটিস কিডনি সমস্যা বা হৃদরোগ এবং স্বাস্থ্য সমস্যা ভুগছেন তারা অবশ্যই পেয়ারা পাতার চা পান করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আর যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা যদি পেয়ারা পাতার চা পান করেন তাহলে এনার্জি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে যেমন ধরেন ফুসকুড়ি চুলকানি বা শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। তাই পেয়ারা পাতার চা পান করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 

পেয়ারা পাতা কি কাজ করে?

পেয়ারা পাতা আমাদের অনেক উপকারী উপাদান। যা আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষা থেকে শুরু করে চুলের যত্ন পর্যন্ত নানারকম উপকার করে থাকে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ আপনারা যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে ভাবছেন বা ওজন কমাতে পারছেন না তাদের জন্য পেয়ারা পাতায় একটি কার্যকরী উপাদান। আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে পেয়ারা পাতার রস খাওয়ার মাধ্যমে বা পেয়ারা পাতা নিয়মিত চিবিয়ে খেলে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে পেয়ারা পাতা। এই পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। যার ফলে শরীরের নানা রকম রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার

চুল পড়া কমাতে সাহায্য করেঃ অনেকে কমবেশি চুল পড়া নিয়ে সমস্যায় থাকে। পেয়ার পাতায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন বি থাকে যা চুলের স্বাস্থ্যকর এর জন্য খুব উপকারী। পেয়ারা পাতার ভূমিকা অনেক যা চুল পড়া রোধ করে এবং গজাতে সাহায্য করে। গবেষকরা মনে করেন চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং চুল পড়া রোধ ও নিয়মিত পেয়ারা পাতা  ব্যবহার করলে চুলের সমস্যা গুলো দূর করতে সাহায্য করে।

ত্বকের যত্নেঃ প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে পেয়ারা পাতায়। ত্বকের যত্নে বেস কার্যকরী উপাদান। ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করতে এবং তাকে দাগ দূর করতে সাহায্য করে পেয়ারা পাতা

ডায়রিয়ার জন্য উপকারীঃ ডায়রিয়া সমস্যা সমাধানের জন্য আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা প্রত্যেক মানুষকে পেয়ারা পাতা চা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 

হজম শক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করেঃ হজম শক্তি ভালো রাখতে পেয়ারা পাতার রস প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে নানা রকম সমস্যা সমাধান হয়। পেয়ারা পাতা হজম শক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

এছাড়াও পেয়ারা পাতা আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে, চোখে দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং দাঁতের সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে।

এলার্জিতে পেয়ারা পাতার ব্যবহার

এলার্জিতে পেয়ারা পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। শুকনো পাতা বা পেয়ারা পাতা নির্যাস এলার্জির বিরুধে সাহায্য করে থাকে। এই পাতায় রয়েছে অ্যান্টিএলার্জিক যা এলার্জি কমাতে সাহায্য করে।

পেয়ারা পাতার নির্যাস তৈরিঃ কিছু পেয়ারা পাতা এনে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। এরপরে পাতাগুলো ভালোভাবে গুঁড়ো করে নিন বা গরম পানিতে পাতাগুলো ফুটিয়ে নির্যাস তৈরি করে নিন। এই পাতার নির্যাস এলার্জির স্থানগুলোতে লাগান। এছাড়াও পেয়ারা পাতা নুরজাজ হালগা গরম পানির সাথে মিশিয়ে পান করতে পারেন এটি শরীরের ভেতর থেকে এলার্জির প্রতিক্রিয়া কমাতে বেশ কার্যকরী। 

পেয়ারা পাতার তেল বানানোর নিয়ম

কিছু পেয়ারা পাতা সংগ্রহ করে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। একটি পাত্রে নারিকেল তেল বা সরিষার তেল নিন এবং তাতে পেয়ারা পাতাগুলো যোগ করুন। এই মিশ্রণটি চুলায় বসিয়ে মাঝারি ভাবে জাল করুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট। এই পাতাগুলো যতক্ষণ না নরম হয় ততক্ষন জাল করুন। জাল করা হয়ে গেলে নামিয়ে নিন এবং এই তেল ঠান্ডা হলে ছেকে নিন।

এরপরে একটি বোতলে ভরে রাখুন। এটেল সপ্তাহে কমপক্ষে ২-৩ বার চুলের গোড়ায় ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। এরপরে এক থেকে দুই ঘন্টা রেখে শ্যাম্পু করে নিন। এভাবে নিয়মিত এ তেল ব্যবহার করলে চুল পড়া কমতে সাহায্য করবে এবং চুলের গোড়া মজবুত হতে সাহায্য করে।

ত্বকের যত্নে পেয়ারা পাতার ফেসপ্যাক

পেয়ারা পাতা দিয়ে রূপচর্চা বা ত্বকের যত্নে পেয়ারা পাতা খুবই উপকারী। এই পাতা ব্রণের সমস্যা দূর করতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ও তাদের করতে সাহায্য করে থাকে। পেয়ারা পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে এবং মশ্চারাইজার হিসাবে কাজ করে। তাহলে জেনে নেয়া যাক পেয়ারা পাতার ফেসপ্যাক বানানোর নিয়ম ও ব্যবহারের নিয়ম। 

যা লাগবে

তাজা তাজা কিছু পেয়ারা পাতা

ইচ্ছা অনুযায়ী মধু

প্রয়োজন অনুযায়ী পানি

পদ্ধতি

পেয়ারা পাতাগুলোকে প্রথমে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।

এরপরে পাতাগুলো ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে পেস্ট তৈরি করুন বা সামান্য জল দিয়ে ফুটিয়ে নিন।

আর সামান্য পরিমাণ মধু এ পেস্টের সাথে মিশিয়ে নিন।

পেয়ারা পাতার ফেসপ্যাক মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর মুখটি হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।

এভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বকের দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

পেয়ারা পাতার হেয়ার প্যাক

পেয়ারা পাতায় রয়েছে ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা চুলের যত্নে বেস কার্যকরী উপাদান। তাই প্রথমে কিছু তাজা পেয়ারা পাতা নিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন এবং পাতা ব্লেন্ড করে নিন। প্রথমে কিছু তাজা পেয়ারা পাতা ভালোভাবে ধুয়ে নিন এরপরে এক লিটার পানিতে ২০ মিনিট ফুটিয়ে নিন ঠান্ডা হয়ে গেলে ছেকে নিন এরপরে চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন লাগানোর কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।

পেয়ারা পাতার পেস্ট বানানোর জন্য পেয়ারা পাতা ব্লেন্ড করে নিন। পেয়ারা পাতার পেস্ট এর সাথে নারিকেল তেল বা ডিম এবং টক দই একসাথে মিশিয়ে এ ব্যাগটি তৈরি করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন।

এছাড়াও শুকনো পেয়ারা পাতা গুড়া করে তৈরি করতে পারেন হেয়ার প্যাক। পেয়ারা পাতাগুলোর সাথে ডিম, দই এবং মেহেদী পাতা বাটা একসাথে মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারবেন।

পেয়ারা পাতা ব্যবহারের অপকারিতা

আপনাদের যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে পেয়ারা পাতার নির্যাস খাওয়ার মাধ্যমে পেটব্যথা বা বমি বমি ভাব হতে পারে। আর এক্ষেত্রে যাদের হজম সমস্যা আছে তাদের আই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। যাদের কিডনি ও মাথা সমস্যা রয়েছে তাদের অতিরিক্ত পেয়ারা পাতা রস ক্ষার মাধ্যমে আরো সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

এছাড়াও যাদের রক্তস্বল্পতা সমস্যা রয়েছে অতিরিক্ত পেয়ারা পাতা খাওয়ার ফলে এ সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। আর যাদের অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই পেয়ারা পাতা ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। কারণ পেয়ারা পাতা রয়েছে ফাইবার ও পটাশিয়াম যা কিছু রোগের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়াতে পারে।

শেষকথাঃ পেয়ারা পাতা দিয়ে রূপচর্চা

পরিশেষে বলা যায় যে, পেয়ারা পাতা দিয়ে রূপচর্চা। পেয়ারা পাতা একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা রূপচর্চায় ব্যবহার করা হয়। এই পাতা ত্বকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে আর, ব্রণ ও দাগ কমাতে সহায়তা করে। পেয়ারা পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকে ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পেয়ারা পাতা চুলে যত্নে ব্যবহার করা হয় এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে। 

এছাড়াও পেয়ারা পাতা চুলের যত্নে কার্যকরী পালন করে। আমাদের নানা রকম সমস্যা সমাধান করতে পেয়ারা পাতার জুড়ির শেষ নেই। তাই পেয়ারা পাতা আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। পেয়ারা পাতার ব্যবহারের নিয়ম জানলে আমাদের অনেক কাজে ব্যবহার করা যায়। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাবিনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url