লাউ শাকের ২০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ একসাথে জানুন

লাউ শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন। লাউ শাকের  অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে বেস উপকারী। তাই এর গুনাগুন জানায় খুবই জরুরী বিষয়। 

লাউ-শাকের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

আজকের এই আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন লাউ শাক খাবার ফলে আমাদের শরীরে আইরন কিভাবে পাওয়া যায় কতটা উপকার করে। তাহলে লাউ শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক। 

সূচিপত্রঃ লাউ শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা

লাউ শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা

লাউ শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা, সম্পর্কে আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন। লাউ শাক আমরা দৈনন্দিন জীবনে কমবেশ অনেকেই পরিচিত। তাহলে জেনে নেয়া যাক লাল শাকের উপকারিতা সম্পর্কে।

লাউ শাকের ২০টি উপকারিতা  
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণঃ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে থাকে লাউ শাক খাওয়ার ফলে। 
  • ওজন নিয়ন্ত্রণঃ লাউ শাক ওজন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে কারণ লাউশাক ফ্যাট মুক্ত। 
  • হৃদস্পন্দন ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ লাউ শাকে রয়েছে পটাশিয়াম যার ফলে হৃদস্পন্দন ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
  • হাড়কে মজবুত রাখতেঃ লাউশাকে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং অস্টি ওপোরে্সিস। পুষ্টির অভাব দূর করতে সাহায্য করে এছাড়াও আমাদের শরীরের হাড়কে মজবুত রাখতে বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম এর কারণে।
  • আয়রনঃ লাউশাকে রয়েছে আয়রন এটি খাওয়ার ফলে রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ও লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে লাউ শাকে যা আমাদের শরীরের শক্তি বাড়াতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকে। আর এর ফলে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। 
  • কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করেঃ নানা ধরনের ফাইবার রয়েছে লাউ শাকে। লাউ শাক খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আর পেটের যাবতীয় সমস্যা বলে থাকে খুব অল্প সময়ের মধ্যে নিরাময় করতে সক্ষম হয়। 
  • হজমে সমস্যা দূরঃ হজমে সমস্যা দূর হয় লাউ শাক খাওয়ার ফলে। আপনারা যারা বদহজম সমস্যায় ভুগছেন তারা লাউ শাক খেতে পারেন। লাউ শাক খাওয়ার ফলে হজম প্রক্রিয়া দ্রুত সময়ের মধ্যে হজম হয়ে থাকে। 
  • লিভারের সমস্যা দূর করতেঃ লিভারের অনেক উপকার হয়ে থাকে লাউ শাক খাওয়ার ফলে। এই শাক লিভারের যাবতীয় ক্ষতিকারক টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং লিভার সুস্থ থাকে।
  • পাইলসের মত সমস্যা থেকে রক্ষা পেতেঃ প্রচুর পরিমাণে আশ রয়েছে লাউ শাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পাইলসের মত সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে খেতে পারেন লাউ শাক। এই শাক খাওয়ার মাধ্যমে এগুলো থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। 
  • দ্রুত শক্তি যোগায়ঃ দ্রুত শক্তি যোগাতে লাউসার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লাউ শাক খাওয়ার মাধ্যমে দ্রুত শক্তি ফিরে আসে এবং ক্লান্তি ভাব দূর হয়ে যায়।
  • জ্বর ঠান্ডা প্রতিরোধেঃ লাউ শাক প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা প্রভাব থাকে যার ফলে এটি খাওয়ার মাধ্যমে শরীর ঠান্ডা রাখে এবং ভাইরাস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। 
  • অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ লাউশাকে রয়েছে আয়রনের উৎস যা রক্তস্বল্পতা রোগীদের জন্য উপকার করে থাকে।
  • গ্যাস্টিকের উপশমের কার্যকরঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানে বেস কার্যকরী ভূমিকা পালন করে লাউ শাক কেননা লাউ শাক খাওয়ার মাধ্যমে পাকস্থলী ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং গ্যাস্টিকের সমস্যা কমায়।
  • জ্বর ও ইনফ্লুয়েঞ্জারঃ লাউশাক নির্যাস প্রাকৃতিক যা খাওয়ার মাধ্যমে জ্বর কমাতে সাহায্য করে থাকে।
  • চুল পড়া কামাইঃ লাউ শাক রয়েছে আয়রন এবং ভিটামিন যা চুলের গোড়া মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
  • ইমিউন সিস্টেম বাড়াতে সাহায্য করেঃ লাউ সাপে রয়েছে ভিটামিন সি ও অন্যান্য অ্যান্টিক অক্সিডেন্ট উপাদান যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের জন্যঃ লাউশাকে রয়েছে আন্টিঅক্সিডেন্ট এর গুনাগুন যা আপনাদের ত্বকের উপজেলাতে বাড়াতে এবং বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • হৃদযন্ত্রের সুস্থ রাখতেঃ লাউশাক কুণ্ড সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং কোলেস্টেরল কমাতে পারে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ লাউসাকে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকার জন্য এটি রাতে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।

লাউ শাকের অপকারিতা সমূহ

আপনারা এতক্ষণ জানলেন লাল শাকের উপকারিতা সমূহ কিন্তু তার পাশাপাশি রয়েছে অপকারিতা।লাউশাক স্বাস্থ্যসম্মত এবং নিরাপদ একটি সবজি। তবে কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে মানুষের। কোন কিছু প্রত্যেকটি পরিমাণে খাওয়া ভালো নয়। অতিরিক্ত খাওয়ার মাধ্যমে পেটের সমস্যা পেটব্যথা গ্যাস এবং বদ হজন দেখা দিতে পারে। এছাড়াও যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে এবং উচ্চ রক্তচাপের উঠোনামা হয় তাদের প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক লাল শাকের অপকারিতা সমূহ
  • এলার্জিঃ অনেক মানুষের এলার্জি দেখা দিতে পারে লাউ শাক খাওয়ার মাধ্যমে। মুখে ফুসকুড়ি চুলকানি এবং সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
  • রক্তচাপের উঠানামাঃ কিছু ব্যক্তির রক্তচাপের উঠানামা দেখে দিতে পারে লাউ শাকের উপস্থিতি কিছু উপাদান। তাই যাদের এ ধরনের সমস্যা রয়েছে লাউ শাক খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
  • বদহজম এবং গ্যাস অতিরিক্ত লাউ শাক খাওয়ার মাধ্যমে বদহজম এবং গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন ধরুন পেট ফাঁপা।
  • লাউ শাকে রয়েছে অক্সলেটস অতিরিক্ত খাওয়ার মধ্যে নেই কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় বিশেষ করে যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে।
  • লাউ শাক খেলে প্রতিক্রিয়া হতে পারে কিছু ঔষধের সাথে। ভিটামিন কে সমৃদ্ধ ব্লাড থিনার ঔষধ খেলে সমস্যা দেখে দিতে পারে।

লাউ শাকের পুষ্টি উপাদান 

লাউ শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা, আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন লাউ শাকের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে। লাউ শাক পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি উপাদান। এটি খাবার ফলে নানা ধরনের রোগ বালাই থেকে রাখা পেতে সাহায্য করে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক লাউ শাকের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে।


পুষ্টি উপাদানঃ ক্যালসিয়াম রয়েছে 20 মিলিগ্রাম ফ্যাট রয়েছে 0.6 মিলিগ্রাম ফসফরাস রয়েছে 10 মিলিগ্রাম প্রোটিন রয়েছে 0.2 গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট রয়েছে 2.5 গ্রাম, নিকোটিনিক এসিড 0.2 মিলিগ্রাম, প্রোটিন 0.2 গ্রাম এবং ভিটামিন সি রয়েছে 6 গ্রাম। এই পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের শরীরের জন্য বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।                       

লাউ শাক খাওয়ার নিয়ম

লাউ শাক বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়া যায়। যেমন ধরেন ভর্তা, ভাজি বা তরকারি হিসেবে খাওয়া যায় এটি কাটার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। লাল শাক কচি ব্যবহার করা খুব ভালো। তাহলে জেনে নেয়া যাক লাউ শাক খাওয়ার নেম সম্পর্কে।

1.তরকারিঃ লাউ শাক প্রথমে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে তারপরে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিতে হবে এবং অন্যান্য তরকারি দিয়ে রান্না করা যায়। 

2.ভাজিঃ প্রথমে লাউ শাক কুচি কুচি করে কেটে পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা, মরিচ দিয়ে ভেজে নিন এরপরে লবণ ও অন্যান্য মসলা দিয়ে ভাজি তৈরি করতে পারেন।

3.ভর্তাঃ প্রথমে লাউ শাক সেদ্ধ করে নিন এবং পিয়াজ, রসুন, কাঁচা মরিচ ও সরিষার তেল দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে ভর্তা তৈরি করতে পারেন। 

4.অন্যান্যঃ লাউ শাক অন্যান্য রেসিপিতে ব্যবহার করা যেতে পারে যেমনঃ নুডলস বা সুপ।

গর্ভাবস্থায় লাউ শাক খাওয়ার উপকারিতা 

আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন গর্ভাবস্থায় লাউ শাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য তালিকায় একটি পুষ্টিকর সংযোজন ভিটামিন ও খনিজ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ হচ্ছে লাউ শাক অনেক উপকার করে থাকে। আর তার সাথে শিশুর জন্য বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করতে সাহায্য করে। এছাড়াও লাউশাকে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড রয়েছে যা নবাগত শিশুর স্পাইনাল কর্ড। মস্তিষ্কের উন্নতির জন্য এমন ধরনের খাবার খাওয়া প্রয়োজন। 

 
লাউ শাক খাওয়ার ফলে সে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফলিক ক্যাসিড পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর যদি গর্ভবতী মায়েরা ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ না করে তাহলে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাহলে শিশুর মস্তিষ্ক বিকৃত হতে পারে এছাড়াও মৃত শিশুর জন্ম হতে পারে। মায়েদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন হচ্ছে লাউ শাক। আর লাউ শাকে রয়েছে ভিটামিন সি যা যা ঠান্ডা জাতীয় রোগের সমস্যা সমাধান করে থাকে এছাড়াও এটি খাওয়ার ফলে সুন্দর ঘুমের ব্যবস্থা হবে তবে অতিরিক্ত খাওয়ার চেষ্টা করবেন না যে কোন জিনিস নিয়ম করে খাবেন।

লাউ শাকে কি এলার্জি আছে?

 আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন বা প্রশ্ন করে থাকেন যে লাউ শাক কি এলার্জি আছে এর সম্পর্কে আজকের এই পর্বে আপনারা জানতে পারবেন লাউ শাক খাওয়ার ফলে এলার্জি হয় কি না সে সম্পর্কে।সবকিছু রোদ ভালো দিক এবং খারাপ দিক রয়েছে এক্ষেত্রে লাউ শাক ব্যতিক্রম নয়। আপনাদের যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে লাউ শাক খাওয়ার ফলে তাদের এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন ধরেন খাওয়ার ফলে চুলকানি শরীরে গোটা গোটা হয়ে যাওয়া ফুসকুড়ি ওঠা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। 

তাহলে বুঝবেন এ খাওয়াতে আপনার জন্য নিরাপদ নয়। তবে যদি খাওয়ার ফলে কোন ধরনের সমস্যা না হয় তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন নিশ্চিন্তে এ খাওয়াটা আপনার জন্য নিরাপদ। তবে লাউশাক খাওয়ার জন্য নিয়ম গুলো মেনে খাওয়া উচিত। এভাবে নিয়ম মেনে খেলে আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকার। তাহলে বুঝতে পারছেন আমাদের জন্য লাউ শাক কতটা উপকার করে।

লাউ শাকে কি ভিটামিন থাকে? 

আপনাদের মনে অনেক প্রশ্ন জাগে লাউ শাকে কি কি ভিটামিন রয়েছে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক লাউ শাকে  কি ভিটামিন রয়েছে সেসব সম্পর্কে। 

ভিটামিন সিঃ প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এবং পুষ্টি উপাদান থাকে। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে আর শরীরের ক্ষতিকারক থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। এছাড়াও ঠান্ডা সর্দি এবং অন্যান্য সংক্রমণ প্রতিরোধে ভিটামিন সি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ফলিক অ্যাসিডঃ গর্ভবতী মায়েদের জন্য ফলিক এসিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি  গর্ভে থাকা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে এবং স্পাইনাল কর্ড স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় খাবার।

ভিটামিন এঃ লাউ শাকের রয়েছে ভিটামিন এ যা চোখের জন্য খুব প্রয়োজন এবং চোখের স্বাস্থ্য উন্নত রাখতে সাহায্য করে শরীরের কোষের বৃদ্ধিতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

ফাইবারঃ প্রচুর পরিমাণে লাউশাকে ফাইবার রয়েছে যা আমাদের হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস রোগ কমাতে সাহায্য করে।

ভিটামিন বি কমপ্লেক্সঃ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর বিভিন্ন উপাদান যেমন থায়ামিন, নিয়াসিন এবং রিবোফ্লোবিন থাকে লাউ শাকে। যা আমাদের শরীরের শক্তি উৎপাদন করতে এবং স্নায়ুর কার্যকারিতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে 

আয়রন ও ক্যালসিয়ামঃ আইরন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে লাউসাকে যা আমাদের দাঁতকে মজবুত রাখতে এবং রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।

লাউ শাক খেলে কি ওজন বাড়ে? 

আপনার অনেকে জানতে চেয়েছেন যে লাউ শাক খেলে ওজন বাড়ে কিনা? কিন্তু আসলে লা শাক খেলে ওজন বাড়ে না লাউ শাকের রয়েছে ফাইবার এবং পানি যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক লাউ শাক কিভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে সেসব সম্পর্কে।

  • কম ক্যালরিঃ লাউসাকে কম ক্যালরি থাকার কারণে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • হজম প্রক্রিয়ার উন্নত করতে সাহায্য করেঃ লাউশাকে খাবারের উপস্থিতির কারণে হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে এবং তার সাথে ওজন কমাতে সহায়তা।
  • ফাইবারঃ ফাইবার প্রচুর পরিমাণে থাকে লাউ শাকে যার কারণে এটি খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করার প্রবণতা কম থাকে যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে। 
  • পানির পরিমাণ বেশি থাকেঃ পানির পরিমাণ বেশি থাকার কারণে লাউ শাকে এটি আমাদের শরীরে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে।
  • অন্যান্য পুষ্টি উপাদানঃ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে লাউ শাকে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি এক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ প্রয়োজন। আমাদের শরীরের সামগ্রীর স্বাস্থ্যের উন্নত ঘটাতে সাহায্য করে।

লাউ শাক খেলে কি উপকার হয়?

লাউ শাক খেলে আমাদের কি কি উপকার হয় সেসব সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন অনেকে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক লাউ শাক খেলে আমাদের যা যা উপকার হয় সম্পর্কে।
  • দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে
  • পাকস্থলী সুস্থ রাখে
  • ভ্রনের দেহ গঠনে সাহায্য করে
  • রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করে
  • হাড় শক্তিশালী করতে ও মজবুত রাখতে সাহায্য করে
  • বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ ও ঠান্ডা জাতীয় রোগ নিরাময় করতে সহায়তা করে
  • ঘুমের উন্নত হয়
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে
  • মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে
  • প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে
  • তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে 
  • ওজন বৃদ্ধি কমাতে সাহায্য করে 
  • পাইলসের রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী

লাউ শাক খেলে কি গ্যাস হয়?

কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে লাউ শাক খেলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে লাউশাকে যা হজম হতে সময় লাগে এবং গাছের সমস্যা তৈরি করতে পারেন। এরকম সমস্যা সবার হয় না, তবে কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে হতে পারে। যাদের হজম শক্তি দুর্বল তাদের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আবার কিছু মানুষের এলার্জি থাকতে পারে লাউ শাকে। যার ফলে পেটের গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।


করণীয়ঃ যাদের লাউ থাকে সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই পরিমাণে খেতে হবে। আর অন্যান্য গ্যাস জাতীয় সমস্যা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। হজম শক্তি বাড়াতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করতে পারেন। লাউ শাক খাওয়ার ফলে যদি সমস্যা সৃষ্টি হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তাহলে বুঝতে পারছেন যে কোন জিনিসের ভালো এবং খারাপদের রয়েছে।

লাউ শাকের পাকোড়া বানানোর নিয়ম

লাউ শাকের পাকোড়া বানানোর জন্য কিছু লাউ শাক নিতে হবে। এরপরে কুচি কুচি করে কেটে তিন কাপ পরিমাণ নিতে হবে। আরো নিতে হবে ধনেপাতা কচি, ময়দা, চালের গুড়া, মরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি,  জিরা গুড়া এবং লবণ। এই সব উপকরণগুলো একটি বড় বাটিতে নিয়ে হাত দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিতে হবে তেল বাদে। মাখানো হয়ে গেলে হাত দিয়ে ছোট ছোট করে পাকোড়া বানাতে হবে

তারপরে চুলাতে প্যানেল বসাতে হবে এবং প্যানেলে তেল ঢেলে গরম করে নিতে হবে। গরম হয়ে গেলে ছোট ছোট পাকোড়া গুলো তেলে ছেড়ে দিতে হবে এবং আস্তে আস্তে নেড়ে ভেজে নিতে হবে। তারপরে  তেল ছাড়িয়ে নিতে হবে এভাবে তৈরি করা হয় মজাদার পাকোড়া। আপনারা এগুলো বিকেলের নাস্তায় তৈরি করে খুব সহজে খেতে পারেন। তাহলে বুঝতে পারছেন কিভাবে পাকোড়া তৈরি করা হয়। 

লেখকের মন্তব্যঃ লাউ শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা 

পরিশেষে বলা যায় যে, লাউ শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা। লাউ শাক  আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি পুষ্টিকর সমৃদ্ধ উপাদান। যা আমাদের স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য অনেক উপকার করে থাকে। খাওয়ার মাধ্যমে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং দৃষ্টিশক্তির উন্নত হয়। আর চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে, ত্বকের উন্নত ঘটায়, সর্দি ও কাশি নিরাময় করতে সাহায্য করে।  

এছাড়াও আমাদের আরও দৈনন্দিন জীবনে উপকার করে থাকে গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য তালিকায় একটি পুষ্টিকর সংযোজন ভিটামিন ও খনিজ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ হচ্ছে লাউ শাক অনেক উপকার করে থাকে।আর তার সাথে শিশুর জন্য বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করতে সাহায্য করে। তাহলে বুঝতে পারছেন লাউ শাক আমাদের জীবনের কত ধরনের কত উন্নত করে থাকে তাই নিয়মিত ভাবে লাউ শাক খাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাবিনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url