শুকনো মরিচের ২৫ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

 শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। শুকনো মরিচ আমাদের দৈনন্দিন রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আমরা কেউ এ মরিচের সঠিক গুনাগুন সম্পর্কে জানিনা। তাই আমাদের মরিচের গুনাগুন জানা অত্যন্ত প্রয়োজন।

শুকনো-মরিচের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

শুকনো মরিচ আমাদের কতটা উপকার করে এবং ক্ষতি করে এসব সম্পর্কে আপনারা আজকের এই আর্টিকেলে জানতে পারবেন। তাহলে জেনে নেওয়া যাক শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং যাবতীয় গুণাগুণ সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ

শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা

শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন আপনারা। শুকনো মরিচ দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক বেশি ব্যবহার করে থাকি। তাই শুকনো মরিচের যাবতীয় উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন আজকের এই আর্টিকেলে। জানতে পারবেন শুকনো মরিচের ভর্তা রেসিপি সম্পর্কে আর শুকনো মরিচের পুষ্টিগুণ। 

আরো জানতে পারবেন শুকনো মরিচের আচার বানানোর নিয়ম ও শুকনো মরিচের উপকারিতা সম্পর্কে। এছাড়া আরো জানতে পারবেন শুকনো মরিচ খেলে কি হয়? আর মরিচ গুঁড়ার উপকারিতা সমূহ, পোড়া মরিচ খেলে কি হয়? শুকনো মরিচের আরো অন্যান্য গুণাবলী সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে জেনে নেওয়া যাক শুকনো মরিচের বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে।

শুকনো মরিচের ২৫ উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো

হাই প্রেসার কমাতে সাহায্য করেঃ আপনাদের জাদের হাই প্রেসারের সমস্যা আছে তাদের জন্য হতে পারে একটি আদর্শ ওষুধ শুকনো মরিচ। মরিচ খাওয়ার মাধ্যমে হাই প্রেসার সমস্যা কমতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়ঃ আপনারা যারা নানা রকম সমস্যায় ভুগছেন তারা শুকনা মরিচ খেলে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বেড়ে যাবে।

দাঁতের ব্যথা দূর করতেঃ যাদের দাঁতের ব্যথা রয়েছে শুকনো মরিচ খেলে দাঁতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তাই এ ব্যথা কমাতে শুকনো মরিচ খেতে পারেন। স্বপ্ন মরিচা রয়েছে।

চোখের উন্নতির জন্যঃ শুকনো মরিচা রয়েছে ভিটামিন এ চোখের উন্নতির জন্য বেশ কার্যকরী। তাই আপনাদের যাদের চোখের সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই শুকনো মরিচ খাওয়া চেষ্টা করতে পারেন।

পাকস্থলীর ক্ষত সারাতেঃ পাকস্থলীর অভ্যন্তরীণ দেয়ালকে উদ্দীপিত করে শুকনো মরিচ। পাকস্থলের রস শোষণ করতে সাহায্য করে এবং পাকস্থলীর ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশ কমিয়ে আনে। যার ফলে মাংসের ক্রিয়াশীলতা স্বাভাবিক রাখে এবং হজমে ক্ষমতা বৃদ্ধি ক...

ক্ষুধা কমায়ঃ শুকনা মরিচে রয়েছে ক্যাপসিকিন উপাদান যা আপনার ক্ষুধা কমে আনতে এবং সব সময় পেট ভরা অনুভব করতে সাহায্য করে।

গিটের ব্যথা কমায়ঃ শুকনো মরিচে রয়েছে ভিটামিন ই যা দেহের গেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আর হাড়ের ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি করে যার কারনে গিটের ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়

শ্বাস প্রশ্বাস জনিত সমস্যা দূর করতেঃ আপনাদের যাদের শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা রয়েছে তাদের শুকনো মরিচ খাবার ফলে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে যেমন হাঁপানি।

আলসার ভালো করতে সাহায্য করেঃ আলসার ভালো হয়ে থাকে শুকনো মরিচ খাওয়ার মাধ্যমে। মরিচ খাওয়ার ফলে হজমের উন্নত হয়। আর তার সাথে গ্যাস এবং বমি বমি ও পেট ব্যথা সমস্যা ভালো করতে সাহায্য করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণেঃ ওজন নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকরী শুকনা মরিচ। শুকনো মরিচ খাওয়ার ফলে শরীর থেকে ক্যালরি কমে যায় যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে করে।

রক্ত জমাট বাদতেঃ  শুকনো মরিচ নেমে তো খাওয়ার ফলে রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে।

ক্যান্সারঃ শুকনো মরিচা রয়েছে লাইকোপিন নামক উপাদান। এই উপাদান ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

ফুসফুস ও মূত্রনালীর সংক্রমণ ঠেকাতেঃ প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি রয়েছে শুকনো মরিচে। শুকনা মরিচ নিয়মিত খাওয়ার ফলে ফুসফুস ও মূত্রনালীর যাবতীয় সংক্রমণ খুব সহজে ঠেকানোর জন্য কাজ করে।

রক্তস্বল্পতা দূর করতেঃ আমাদের শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে ফোলেট ও ভিটামিন বি৬ উপাদান পাওয়া যায় শুকনো মরিচ খাওয়ার ফলে। এর ফলে রক্ত স্বল্পতা হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেঃ ক্যাপসিসিন নামক এক ধরনের উপাদান রয়েছে শুকনো মরিচে। কে উপাদান সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে।

ত্বকের যত্নেঃ শুকনো মরিচা রয়েছে ভিটামিন এ এবং ই। যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং চুলের বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

মানসিক চাপ কমাতেঃ শুকনো মরিচ খাওয়ার ফলে মানসিক চাপ কমায়। এটি মস্তিষ্কের নিঃসরণ বাড়াতে সাহায্য করে এবং মুড ভালো করে ও স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার উপকারিতা

হাড় মজবুত ও শক্ত করতেঃ শুকনা মরিচে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকার কারণে হাড় মজবুত ও শক্ত করতে সাহায্য করে।

বয়সের ছাপ কমাতেঃ শুকনা মরিচে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের বয়সের ছাপ কমাতে এবং কোষ ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।

ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ থেকে বাঁচাতেঃ শুকনো মরিচে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল নামক উপাদান রয়েছে। যা আমাদের ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে।

রক্ত সঞ্চালনঃ শুকনো মরিচ রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে। শুকনো মরিচ খাওয়ার ফলে হৃদরোগে ঝুঁকি কমে যায়।

ঠান্ডা ও জ্বর কমাতেঃ শুকনো মরিচ ঠান্ডা ও জ্বরের বিরুদ্ধে লড়াই করে। শুকনো মরিচ খাওয়ার ফলে শরীর গরম করে এবং ভাইরাসজনিত সংক্রমণের প্রতিরোধে সাহায্য করে। 

স্ট্রোক ও হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতেঃ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত শুকনো মরিচ খাওয়ার ফলে স্ট্রোক ও হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

ভিটামিন সি সরবরাহ করেঃ ভিটামিন সি রয়েছে প্রচুর পরিমানে শুকনো মরিচে যা শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি ভিটামিন। আপনাদের শরীরে ভিটামিন সি সরবরাহ করতে সাহায্য করে।

ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন রয়েছে শুকনো মরিচে যা ত্বকের ফ্রি রেডিকেলের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। 

শুকনো মরিচের ভর্তার রেসিপি

আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন শুকনো মরিচের ভর্তা কিভাবে বানায়। আপনি এখন জানতে পারবেন শুকনো মরিচের ভর্তা বানানোর সম্পর্কে। প্রথমে আপনি কিছু পরিমাণ শুকনো মরিচ নিয়ে নিবেন, এরপরে একটি পাত্রে মরিচগুলো মুড়মুড়ে করে ভেজে নিবেন। ভাজা শেষ হয়ে গেলে মরিচগুলো নামিয়ে নিবেন। নামানোর পর ভালোভাবে ভেঙে নিবেন।

এ বাটা মরিচের সাথে পেঁয়াজ কুচি, ধনিয়া পাতা, সরিষার তেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তাহলে হয়ে গেল শুকনো মরিচের ভর্তা। এই ভর্তা দুপুরের গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন। গরম ভাতের সাথে খেতে বেশি ভালো লাগে।

শুকনো মরিচের পুষ্টিগুণ

আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন এবং শুকনো মরিচের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। শুকনো মরিচে রয়েছে নানা রকম পুষ্টিগুণ। এই পুষ্টিগুণ গুলো আমাদের শরীরের জন্য বেশ কার্যকরী উপাদান। শুকনা মরিচের পুষ্টিগুণ আমাদের নানা রকম সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক শুকনো মরিচের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

শুকনো মরিচের পুষ্টিগুণ প্রতি ১০০ গ্রামে

  • ২৩৯% রয়েছে ভিটামিন সি
  • ৫% রয়েছে আয়রন
  • ৫% রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম
  • ১% রয়েছে ক্যালসিয়াম
  • ২৫% রয়েছে ভিটামিন বি৬
  • ৯ মিলিগ্রাম রয়েছে সোডিয়াম
  • ৩২২ মিলিগ্রাম রয়েছে পটাশিয়াম
  • ৫ গ্রাম রয়েছে সুগার
  • ১.৯ গ্রাম রয়েছে প্রোটিন

শুকনো মরিচের আচার রেসিপি

শুকনো মরিচের উপকারিতা আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে শুকনো মরিচের আচার কিভাবে তৈরি করা হয়? তাই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন শুকনো মরিচের আচার তৈরি করার নিয়ম। তাই আপনাকে শুকনো মরিচ লম্বা লম্বা গুলো নিতে হবে। ট্যাড়া ব্যাকা মরিচ নিতে হবে না, লম্বা লম্বা ভালো মরিচ গুলো উপরের অংশ কেটে বীজগুলো ভালোভাবে বের করে নিতে হবে। আচার বানানোর জন্য কালো সরিষা, সাদা সরিষা এবং শুকনো ধনে ইত্যাদি নিতে হবে। 

এগুলো মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে ব্লেন্ড করার সাথে আবার আমসত্ত্ব আর শুকনো মরিচের বিচিগুলো একসাথে নিয়ে আবার ব্লেন্ড করে নিতে হবে। কাটা শুকনো মরিচ গুলোর ভিতরে এ মিশ্রণগুলো অল্প অল্প করে ভরে দিতে হবে। এরপরে কাচের বোয়েমে লম্বা লম্বা করে রাখতে হবে যাতে মিশ্রণগুলো না পড়ে যায়। তারপরে আচারের বোয়েমে সরিষার তেল দিয়ে ভরাট করে নিতে হবে। এরপরে কয়েকদিন রেখে দিলে মরিচগুলো নরম হয়ে আসবে। এভাবে তৈরি করা হয় শুকনো মরিচের আচার।

শুকনো মরিচের গুড়া সংরক্ষণ করার পদ্ধতি

শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে, শুকনো মরিচের গুঁড়া সংরক্ষণ করার জন্য একটি বায়ুরোধী পাত্রে, অন্ধকার, শীতল এবং শুষ্ক স্থানে রাখতে হবে। শুকনো মরিচের গুঁড়া দীর্ঘদিন ভালো রাখার জন্য সূর্যের আলো এবং আদ্রতা থেকে দূরে রাখতে হবে। তবে মরিচ গুঁড়ো করার পূর্বেই মরিচগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে তারপরে গুড়া করবেন। 

শুকনো মরিচের গুড়া সংরক্ষণের উপায়

বায়ুরোধী পাত্রেঃ বায়ুরোধী কাঁচের পাত্রে বা প্লাস্টিকের পাত্রে মরিচের গুঁড়া রাখুন। এতে করে বাইরের আদ্রতা, বাতাস ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না মরিচের গুলোকে সতেজ রাখবে।

আরো পড়ুনঃ  গর্ভাবস্থায় কাজুবাদাম খাওয়ার উপকারিতা

শুষ্ক স্থানঃ মরিচের গুঁড়ো শুষ্ক স্থানে রাখা দরকার। কারণ মরিচের আদ্রতা এবং সাদ ও গন্ধ নষ্ট করে দিতে পারে সেজন্য।

শীতল ও অন্ধকার স্থানেঃ মরিচের গুঁড়ো সংরক্ষণের জন্য আপনি বেছে নিতে পারেন শীতল ও অন্ধকার স্থান। যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো বা তাপের উৎস পৌঁছতে না পারে এরকম স্থানে।

রসুনের ব্যবহারঃ আপনি যদি মরিচের গুঁড়োর দুই একটি রসুনের কোয়া রাখলে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে মরিচের গুড়া।

অন্যান্য মসলা থেকে আলাদা রাখাঃ অন্যান্য মসলা থেকে আলাদা রাখা উচিত মরিচের গুঁড়া। কারণ অন্যান্য মসলা মরিচের গুণাগুণ নষ্ট করে দিতে পারে।

শুকনো মরিচ খেলে কি হয়?

আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন যে শুকনো মরিচ খেলে কি হয়? শুকনো মরিচ অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে? সেসব সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক, রান্নায় অতিরিক্ত শুকনো মরিচ ব্যবহার করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। অতিরিক্ত শুকনো মরিচ খাওয়ার ফলে পরিপাকতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়াও শুকনা মরিচ খাওয়ার ফলে ঝাল লাগে যা পেটের সমস্যা তৈরি করতে পারে তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি স্বাস্থ্যকর হতে পারে।

শুকনো মরিচ খেলে শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত খাবার ফলে সমস্যা বুক জ্বালাপোড়া, হজমের সমস্যা এবং এসিডিটি হতে পারে। তবে শুকনো মরিচ খাওয়ার ফলে ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কিছু মানুষের আলসারের সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই জেনে বুঝে শুকনো মরিচ খাবেন।

শুকনো মরিচের অপকারিতা

অনেকে জানতে চেয়েছেন শুকনো মরিচের অপকারিতা সম্পর্কে। তাই শুকনা মরিচের উপকারিতা গুলো জানতে পারবেন আজকের এই পর্বে শুকনো মরিচ আমাদের যেমন উপকার করে তার পাশাপাশি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকারক। তাহলে জেনে নেওয়া যাক শুকনো মরিচের উপকারিতা গুলো।

  • গর্ভবতী মায়েরা যদি এ অবস্থায় শুকনো মরিচ খায় তাহলে শ্বাসকষ্ট সংস্থা দেখা দিতে পারে। আর এর সাথে বাচ্চার ও সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই গর্ভবতী মায়েদের শুকনো মরিচের গুঁড়া খাওয়া একদম নিরাপদ নয়।
  • অ্যাজমা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অতিরিক্ত শুকনো মরিচের গুড়া খাবার ফলে। তাই এ ধরনের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে শুকনো মরিচের গুঁড়া বেশি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
  • অতিরিক্ত শুকনো মরিচ খাওয়ার ফলে বদহজমের সমস্যা দেখা দেয়।
  • অতিরিক্ত মরিচ খাওয়ার ফলে যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
  • যাদের অতিরিক্ত রক্তচাপ রয়েছে তাদের শুকনো মরিচ খাওয়ার ফলে ক্ষতি হতে পারে। 

মরিচের গুড়া উপকারিতা

একটি জনপ্রিয় মসলার হচ্ছে মরিচের গুড়া যা রান্না ছাপ বাড়াতে সাহায্য করে। মরিচের গুঁড়া আমাদের বিভিন্ন স্বাস্থ্যের উপকারিতা প্রদান করে থাকে। যেমনঃ রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে, ব্যথা উপশম করতে আর হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক মরিচের গুড়ার কিছু উপকারিতা গুলো।

রোদ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে মরিচের গুড়া। কারণ মরিচের গুড়া রয়েছে ভিটামিন এ এবং সি।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে এবং পেটের সমস্যা কমাতে পারে মরিচের গুড়াতে ক্যাপসাইসিন উপাদান।

ব্যথা উপসমঃ মরিচের গুড়াতে ক্যাপসাইসিন উপাদান রয়েছে যা ব্যাথা উপশম করতে পারে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

স্ট্রোক ও হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতেঃ  গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত মরিচের গুড়া খাওয়ার ফলে স্ট্রোক ও হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। 

ওজন নিয়ন্ত্রণেঃ ওজন নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকরী মরিচের গুড়া। শুকনো মরিচের গুড়া খাওয়ার ফলে শরীর থেকে ক্যালরি কমে যায় যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে করে। 

শ্বাস প্রশ্বাস জনিত সমস্যা দূর করতেঃ আপনাদের যাদের শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা রয়েছে তাদের মরিচের গুড়া খাওয়ার ফলে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে যেমন হাঁপানি।

শুকনা মরিচ ভাজা খেলে কি হয়?

শুকনা মরিচ ভাজা খেলে ঝাল লাগে এবং পেটের সমস্যা হতে পারে। শুকনা মরিচ ভাজার ফলে ক্যাপসাইসিন উপাদানটি সক্রিয় হয়ে ওঠে যার ফলে ঝাল বের হয়। শুকনা মরিচ ভাজা বেশি খেলে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমনঃ এসিডিটি, আলসার এবং ত্বকের সমস্যা ইত্যাদি। তাহলে জেনে নেওয়া যাক শুকনা মরিচ ভাজা খেলে কি হয়?

ঝাল লাগাঃ শুকনা মরিচ ভাজার ফলে ক্যাপসাইসিন উপাদানটি সক্রিয় হয়ে ওঠে যার ফলে ঝাল স্বাদের জন্য দায়ী হয়।

হজমের সমস্যাঃ শুকনা মরিচ ভাজা অতিরিক্ত খেলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে আর পেটের আলসার এবং এসিডিটি বেড়ে যেতে পারে।

ত্বকের সমস্যাঃ অতিরিক্ত শুকনা মরিচ ভাজা খেলে তাকে এলার্জি বেড়ে যেতে পারে এবং ত্বক ফুসকুড়ি ও লালচে দাগ দেখা দেয়।

শ্বাস প্রশ্বাস জনিত সমস্যাঃ আপনাদের যাদের শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা রয়েছে তাদের শুকনা মরিচ ভাজা খেলে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা বেড়ে যাবে।

কিন্তু শুকনো মরিচ ভাজা পরিমাণ ভাবে খেলে আমাদের অনেক উপকার করে থাকে যেমনঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং ব্যথা উপশম করে ইত্যাদি।

পোড়া মরিচ খেলে কি হয়?

পোড়া মরিচ খেলে ঝাল লাগে এবং পেটের সমস্যা হতে পারে। পোড়া মরিচ ফলে ক্যাপসাইসিন উপাদানটি সক্রিয় হয়ে ওঠে যার ফলে ঝাল বের হয়। পোড়া মরিচ বেশি  খেলে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমনঃ এসিডিটি, আলসার এবং ত্বকের সমস্যা ইত্যাদি। তাহলে জেনে নেওয়া যাক পোড়া মরিচ খেলে কি হয়?

ঝাল লাগাঃ মরিচ পোড়ার মাধ্যমে মরিচে থাকা ক্যাপসাইসিন উপাদানটি ঝাল লাগা অনুভূতি সৃষ্টি করে।

জ্বালাপোড়াঃ মরিচ পুরা খেলে খাদ্যনালি,মুখ ও পেটের জ্বালাপোড়া সমস্যা সৃষ্টি করে।

ডায়রিয়াঃ অতিরিক্ত পোড়া মরিচ খেলে কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শ্বাসকষ্টঃ কারো কারো ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণ পোড় মরিচ খেলে শ্বাসকষ্ট সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বমি ও বমি বমি ভাবঃ অতিরিক্ত পোড়া মরিচ খেলে ঝাল লাগে ও বমি ও বমি বমি ভাব হয়। ত্বকের জ্বালাপোড়াঃ যদি পোড়া মরিচ খাওয়ার সময় ত্বকে লাগে তাহলে সেখানে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে।

 তরকারিতে শুকনো মরিচ কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?

তরকারিতে শুকনো মরিচ ব্যবহারের নিয়ম

গুড়ো করে ব্যবহারঃ শুকনো মরিচ গুড়ো করে ব্যবহার করা যায় যে কোন পর্যায়ের রান্নার তরকারিতে।

ফোরন হিসেবে ব্যবহারঃ শুকনো মরিচ ফোরন হিসাবে তরকারিতে ব্যবহার করা যায় এতে করে তরকারির ঘ্রাণ ও স্বাদ বেড়ে যায়।

শুকনা মরিচ ভেজে নেওয়াঃ আপনি আগে রান্না শুরুতে শুকনো মরিচ হাকা করে ভেজে নিন এতে সুন্দর ঘ্রাণ আসবে এবং তরকারির স্বাদ বাড়িয়ে দেয়। তবে ভালো ভাবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে বেশি না পুড়ে যায়। 

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা

চাটনি বা সসে ব্যবহারঃ চাটনি বা সসে ব্যবহার করা যায় শুকনা মরিচ এতে করে সসের ঝাল এবং স্বাদ বাড়িয়ে দেয়।

সিদ্ধ নরম করে ব্যবহারঃ শুকনো মরিচ চুলাতে পানি দিয়ে সিদ্ধ করে নরম হলে ব্লেন্ড করে যে কোন তরকারিতে ব্যবহার করা যায়।

অন্যান্য মসলার সাথেঃ অন্যান্য মসলার সাথে শুকনো মরিচ মিশিয়ে গুড়ো করে বিভিন্ন তরকারিতে ব্যবহার করা যায়। 

শুকনো মরিচ কিভাবে বানায়

প্রথমে শুকনো মরিচ বানানোর জন্য পাকা মরিচ সংগ্রহ করে নিতে হবে। এরপরে মরিচগুলো ধুয়ে নিতে হবে, আর এ মরিচগুলো রোদে বা ওভেনে শুকিয়ে নিতে হবে। তবে মরিচ শুকাতে রোদে কয়েকদিন সময় লাগে আর ওভেনে শুকালে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় কম সময়ের মধ্যে। তবে তাপমাত্রায় ১২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি যাতে না হয়।

শুকনো মরিচ বানানোর নিয়ম

প্রথমে আপনি পাকা মরিচ সংগ্রহ করুন, আর পচা নষ্ট মরিচগুলো বাদ দিয়ে দিন এরপরে মরিচগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নেই যাতে ধুলাবালি ময়লা না থাকে। রোদে শুকানোর জন্য একটি পরিষ্কার চটের উপর মরিচগুলো এমন ভাবে বিছিয়ে দিন যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো বাতাস পাই। কয়েকদিন নিয়ম করে মরিচগুলো রোদে শুকাতে হবে এবং রাতে উঠে রাখতে হবে।

তবে ওভেনে শুকানোর জন্য মরিচগুলো এমন ভাবে রাখুন যাতে সেগুলো খুব বেশি ঘন না হয় ট্রেতে। ওদের ১০০ থেকে ১২০ ডিগ্রি সেলসিয়া আছে প্রি হিট করে মরিচগুলো শুকানোর জন্য রাখতে হবে।আর মাঝে মাঝে পরীক্ষা করে নিতে হবে, মরিচগুলো মুচমুচে হয়ে গেলে নামিয়ে নিন।

শুকনো মরিচ কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?

শুকনা মরিচ রান্নার স্বাদ বাড়াতে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। শুকনো মরিচ বেটে বা পেস্ট করে ব্যবহার করা হয় রান্নায় এতে করে রান্নার স্বাদ ও ঝাল যুক্ত কর। তাহলে জেনে নেওয়া যাক শুকনো মরিচের কিছু ব্যবহার।

  • শুকনো মরিচ গুড়ো করে তরকারিতে বা অন্যান্য সসে ব্যবহার করা হয়, রান্নার স্বাদ ও ঝাল বাড়াতে সাহায্য করে।
  • শুকনো গোটামরিচ তেলে ভেজে নানা রকম রান্না ব্যবহার করা হয় সুগন্ধ বের হয় এবং অন্যান্য উপকরণ যোগ করে রান্না করা হয়।
  • শুকনো মরিচ ভালোভাবে পুড়িয়ে বা ভেজে ভর্তা তৈরি করা যায় এবং আলুর সাথে, বেগুন ভর্তার সাথে অন্যান্য সবজির সাথে মিশিয়ে পরিবেশন করে খাওয়া যায়।
  • শুকনো মরিচ বিলিন্ডারে পেস্ট করে নানা রকম সসে ব্যবহার করে বা অন্যান্য খাবারে ব্যবহার করা যায়।

শেষকথাঃ শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা

পরিশেষে বলা যায় যে, শুকনো মরিচের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে জানতে পারলেন। শুকনো মরিচ দৈনন্দিন জীবনে আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। আমরা জানতে পারলাম শুকনো মরিচের উপকারিতা সমূহ আরো জানতে পারলাম শুকনো মরিচের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

আরো জানতে পারলাম শুকনো মরিচের বিভিন্ন ব্যবহার, কিভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণ করে এছাড়াও আরো অজানা তথ্য। তাই শুকনো মরিচ সবই জেনে নিয়মিতভাবে ব্যবহার করলে আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। কিন্তু আমরা কেউ এ মরিচের সঠিক গুনাগুন সম্পর্কে জানিনা। তাই আমাদের মরিচের গুনাগুন জানা অত্যন্ত প্রয়োজন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাবিনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url