মেহগনি গাছের বীজের ২০ টি উপকারিতা
মেহগনি গাছের বীজের উপকারিতা গুলো কি? এই বীজের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। কি নিয়মে মেহগনি ফল খেলে আপনার উপকার হবে? আরো অজানা এই গাছের ফলের উপকারিতা এবং গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
মেহগনি ফল আমাদের শরীরে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অনেক উপকার করে থাকে। এই বীজ প্রাচীন কাল থেকে বিভিন্ন রোগের ঔষধি কাজ করে থাকে যা বর্তমান সময়ে বিদ্যমান। তাহলে জেনে নেওয়া যাক এই বীজের উপকারিতা সম্পর্কে।
সূচিপত্রঃ
- মেহগনি গাছের বীজের উপকারিতা
- মেহগনি গাছের বৈশিষ্ট্য
- মেহগনি গাছের ব্যবহার
- মেহগনি বীজ খেলে কী হয়?
- মেহেগনি বীজ খাওয়ার নিয়ম
- মেহগনি গাছের পাতার উপকারিতা
- মেহগনি গাছের পাতার অপকারিতা
- মেহগনি গাছ জন্মাতে কত সময় লাগে?
- মেহগনি গাছ লাগানোর নিয়ম
- মেহগনি গাছ কত বছর বাঁচে?
- শেষকথাঃ মেহেগনি গাছের বীজের উপকারিতা
মেহগনি গাছের বীজের উপকারিতা
মেহগনি গাছের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে আজকে আলোচনা করব। উত্তর আমেরিকার ক্রান্তীয় অঞ্চলে মেহেগনি গাছের আদি নিবাস। পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জকেও চিহ্নিত করা হয়ে থাকে মেহগনি গাছের আদি নিবাস হিসেবে। মেহেগনি রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ট্যানিন আলকালয়েডস বিটার কম্পাউন্ড এইসব ভিটামিন গুলো পাওয়া যায়।
মেহেগনি বীজ আদিকাল থেকে ঔষধ হিসেবে নানা রকম সমস্যা সমাধান
করে থাকে। মেহগনি বীজ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়,
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা হয়।
এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য উপকারী এই রোগ গুলো মোকাবেলা করতে মেহগনি
বীজ অনেকটা সহায়তা করে থাকে। মেহেগনি বীজ আমাদের কিভাবে কাজে সম্পর্কে
আলোচনা করা হলো।
মেহগনি গাছের বীজের উপকারিতা
1.রোদ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধি করেঃ ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মেহেগনি বীজে যা আমাদের রোদ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে।
2.ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে থাকে মেহগনি বীজ। আমাদের মাঝে যাদের মধ্যে ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা মেহগনি গাছের বীজ গুড়া করে প্রতিদিন নিয়মিত করে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
3.রক্ত জমাট বাঁধবে কার্যকরীঃ মেহগনি বীজ একটি কার্যকরী উপাদান যা আমাদের
রক্ত জমাট বাঁধতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে থাকে যাদের অনিদ্রার সমস্যা
রয়েছে তাদের এই সমস্যার সমাধান করে।
4.ত্বকের যত্নেঃ আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে মেহগনি বীজে থাকা উপাদান। এই ফল ত্বকের এলার্জি চুলকানি সমস্যা দূর করে থাকে।
5.ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ আমাদের শরীরে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে থাকে মেহগনি বীজে থাকা উপাদান। মেহগনি বীজের গুঁড়া করে খেলে নিয়মিতভাবে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
6.জ্বর ও ঠান্ডা নিরাময় করতে সাহায্য করেঃ জ্বর ও ঠান্ডা নিরাময় করতে সাহায্য করে মেহগনি বীজ। জ্বর ঠান্ডা নিরাময়ের জন্য একটু মধুর সাথে হাফ কাপ পানি এবং দুই চামচ মেহেগুনে গুড়া ফল একসাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এভাবে দিনে দুই থেকে তিনবার খাওয়ালে জ্বর ঠান্ডা নিরাময় হয়ে থাকে।
7.কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য কার্যকরীঃ আদিকাল থেকে মেহেগনি ফল কষ্টকাঠিন্য রোগের
জন্য কার্যকরী উপাদান। মেহগনি বীজ এর পাউডার হালকা কুসুম গরম পানির
সাথে মিশিয়ে খেলে এই রোগ হতে নিরাময় পাওয়া যায়।
8.খুদা বৃদ্ধিতেঃ সুন্দর একটি সমাধান ক্ষুদা বৃদ্ধিতে মেহগনি বীজ। খুদা নিবারণের জন্য আপনি প্রতিদিন সর্বোচ্চ একটি করে মেহগনি বীজ খেতে পারেন। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিতভাবে একটি করে এ বীজ খান তাহলে আপনার খুদা বৃদ্ধি পাবে।
9.পোকা দমনকারীঃ মেহগনি বীজের সুনাম রয়েছে পোকা দমনকারী হিসেবে। পোকামাকড় দমনের জন্য মেহগনি বীজের পাউডার স্প্রে হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি দেখা যায় গ্রীষ্মকালে যে কোন গাছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মেহগনি গাছের বীজ অনেক উপকার করে থাকে।
10.ঋতুস্রাবের ব্যথা উপশমেঃ মেহেগনি বীজ ঋতুস্রাবের ব্যথা উপশমে খুব ভালো একটি উপাদান। মেহগনি বীজের পাউডার হালকা গরম পানির সাথে মিশিয়ে ঋতুস্রাবের আগে খেতে হবে। তাহলে ব্যথা উপসন হবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
11.রোমেটিজম এবং একজিমা উপশমঃ মেহগনি বীজের পাউডার বেস কার্যকরী একজিমা এবং রোমেটিজম উপশমে। হালকা কুসুম গরম পানির সাথে মেহগনি বীজের পাউডার একসাথে মিশিয়ে খেলে এ সমস্যাগুলো দূর হয়।
12.হাইপার টেনশনঃ মেহেগনি বীজ হাইপার টেনশন কমাতে বেশ কার্যকরী। মেহেগনি বীজ ৪ গ্রাম সংগ্রহ করে সুন্দর করে ধুয়ে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপরে পানি ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে পানি ঠান্ডা হয়ে গেলে এই পানি ফিল্টার করে রেখে সকাল সন্ধ্যা হাফ গ্লাস করে খেতে হবে। কিছুদিন খাওয়ার ফলে হাইপারটেনশন কমে যাবে।
13.ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করেঃ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসকরা ব্যবহার করে থাকে মেহেগনি বীজ। মেহেগনি বীজের পাউডার দুই চামচ হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে খাবারের কিছুক্ষণ আগে খেয়ে নিতে হবে। এতে করে শরীরের সুস্থতা বজায় রাখে।
14.সাপোনিনঃ সাপোনিন হিসেবে পাওয়া যায় মেহগনি বীজের উপকারিতা গুলো। গ্লপোসাইড যা পানি ছাদের নিচে সাবানের ফেনা তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এগুলো মেহেগনি বীজে থাকা সাপোনিন। মেহগনি বীজের সাপোনিন গুলো বিভিন্ন ধরনের আক্রান্ত রোগের সমস্যা সমাধান করে থাকে।
15.ফ্ল্যাভোনয়েডঃ বিশেষ উপকারে একটি উপাদান মানুষের শরীরের জন্য হচ্ছে ফ্ল্যাভোনয়েড যা মেহেগনি বীজ পাওয়া যায়। মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ফ্ল্যাভোনয়েড। মেহেগনি বীজ মানুষের শরীরের জন্য অনেক উপকারিতা করে থাকে। হার্টের সমস্যা এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে মেহগনি বীজ। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা রকম ছোটখাটো সমস্যা গুলো মেহেগনি বীজ থেকে পাওয়া যায় সমাধান।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কাজুবাদাম খাওয়ার উপকারিতা
16.ব্রণ ও ত্বকের দাগ দূর করতে সাহায্য করেঃ মেহগনি বীজ ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায় এবং তা গুড়ো করে রাখা যায়। আর প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে এর ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে লাগানো যায়। এই ফেসপ্যাক নিয়মিত ভাবে ব্যবহার করলে ব্রণ ও ত্বকের দাগ দূর হতে সহায়তা করবে।
17.ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়ঃ মেহগনি বীজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এই বীজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের সৌন্দর্য ফিরিয়া আনে নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে।
18.ওজন কমাতে সহায়তা করেঃ মেহগনি বীজ ওজন কমাতে সহায়তা করে। মেহগনি বীজ শরীরে চর্বি জমা হতে বাধা দেয় এবং মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন কমিয়ে দেয়।
19.মুখের দুর্গন্ধ দূর করেঃ যাদের মুখের দুর্গন্ধ জনিত সমস্যা রয়েছে তারা মেহগনি বীজের পেস্ট করে মুখে নিয়মিতভাবে ব্রাশ করুন। আর মেহগনি বীজের নির্যাত দিয়ে মুখে করে কুলি করলে মুখে দুর্গন্ধ দূর হয়।
20.পাকা চুল প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ মেহগনি বীজ পাকা চুল প্রতিরোধে সাহায্য করে। মেহগনি বীজ ভালোভাবে শুকিয়ে তারপর গুড়ো করে নিতে হবে। বীজের গুঁড়ো নারিকেল তেলের সাথে ১০ থেকে ১৫ মিনিট জাল করে নিতে হবে। তারপরে মাথায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে এবং একঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে তাহলে পাকা চুল কমাতে সাহায্য করবে। এতক্ষণ আমরা জানলাম মেহগনি গাছের বীজের উপকারিতা গুলো কি?
মেহগনি গাছের বৈশিষ্ট্য
মেহগনি গাছের বৈজ্ঞানিক নাম: Swietenia macrophylla. এই মেহেগনি গাছ সাধারনত ৩০ হতে ৫০ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। দ্রুত বর্ধনশীল এই গাছ। মেহেগনি গাছের কান্ড সহজ ও সোজা হয় এবং এই গাছের কাঠ অনেক শক্তিশালী হয়। আর পাতাগুলো গাঢ় সবুজ হয় এবং যৌগিককৃত। ফুলগুলো ছোট ছোট সবুজাভাব সাদা রঙের চোখে পড়ার মতো নয়। এর ফল হয় ডুমুরের মতো কিন্তু বেশ শক্ত হয় আর ফলগুলো ফেটে বীজ বের হয় এবং প্রতিটি ফলে ডানা যুক্ত বীজ থাকে।
মেহগনি গাছের ব্যবহার
মেহগনি গাছের কাঠ অত্যন্ত শক্ত, এবং সৌন্দর্য ও স্থায়িত্বের জন্য বিশ্বব্যাপীতে অত্যন্ত মূল্যবান এই গাছ এ গাছ নানা ধরনের কাজে ব্যবহার করে থাকে। আসবাবপত্র নির্মাণের জন্য মেহগনি কাঠ খুবই মজবুত এবং কাজের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এটির আসবাবপত্র পালিশ করলেই চকচকে রং ধরে তাই অনেকেই দামি ফার্নিচার টেবিল আলমারি চেয়ার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত করে থাকে।
আর নৌকা ও জাহাজ নির্মাণে এই গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। মেহগনি গাছের কাঠ পানিতে সহনশীল হওয়ায় প্রাচীনকালে জাহাজ এবং ছোট নৌকা করে ব্যবহার করাহতো। এছাড়াও বাদ্যযন্ত্র পিয়ানো গিটার তৈরি করে বাজানো হয়। কারণ এর প্রতিফলন শব্দে গুন অনেক ভালো। আরো দরজা,জানালে ও দেওয়ালের কাজে ব্যবহৃত হয়।
মেহগনি বীজ খেলে কী হয়?
মেহগনি বীজ খেলে কী হয়? মেহগনি গাছের বীজের উপকারিতা, মেহগনি বীজ আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। আদিকাল থেকে ঔষধি ভেষজে ভরপুর যা আমাদের শরীরে নানা রকম সমস্যার কাজে লেগে থাকে। এই ভেষজ উদ্ভিদের শুধু মানবজাতির জন্য নয়। এটি উদ্ভিদের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। কীটনাশক তৈরিতে কাজে লাগে মেহগনি বীজ যা উদ্ভিদের যেকোনো ধরনের পোকামাকড় দমন করতে বেশ কার্যকরী।
আরো পড়ুনঃ
আর আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী মেহেগনি গাছের বাকলের নির্যাস। মেহেগনি গাছের বাকল আমাদের পেটের সমস্যা দূর করে থাকে এবং শক্তি যোগান দিয়ে থাকে।মেহেগনি গাছের বাকল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়াও গ্যাস বদহজম কমাতে সাহায্য করে।
মেহেগনি বীজ খাওয়ার নিয়ম
আগে জানতে হবে মেহেগনি বীজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে তারপরে খেতে হবে। তাহলে এবার জানা যাক মেহেগনি বীজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের নানারকম সমস্যা সমাধান করে থাকে।মেহেগনি বীজ কতটা উপকারী সেটা সবারই জানা হলো। তাই পুরোপুরি নিয়ম জেনে শুনে এই বীজ সংরক্ষণ করে খেতে হবে। মেহেগনি বীজ বেশ উপকারী জ্বর সর্দি নিরাময়ের জন্য।
মেহগনি বিজের বুড়া হাফ চামচ এবং এর সাথে মধু এক কাপ পানি সাথে মিশিয়ে হালকা গরম করে খেতে হবে। এতে করে দ্রুত জ্বর সর্দি ঠান্ডা ভালো হয়ে যাবে। এছাড়াও আপনাদের মুখে রুচি ফিরিয়ে আনতে এবং খুদা বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। সেজন্য প্রতিদিন সকালে আপনারা খালি পেটে মেহেগনি বীজের গুড়া প্রতিদিন খেলে আপনাদের রুচি বেড়ে যাবে এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি পাবে।
মেহগনি গাছের পাতার উপকারিতা
মেহগনি গাছের বীজের উপকারিতা, মেহেগনি বীজ যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি মেহগনি গাছের পাতার উপকারিতা রয়েছে। তাই এখন আপনাদের মেহগনি গাছের পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো।
ঔষধি গুণঃ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফরমেটরি উপাদান রয়েছে মেহেগনি গাছের পাতায় প্রচুর পরিমাণে। এই উপাদানগুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে।
ত্বকের যত্নেঃ মেহগনি গাছের পাতা ত্বকের যত্নে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। ত্বকের ইনফ্লুামেশন ও ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমনে বিরুদ্ধে লড়াই করে। নিয়মিত ভাবে মেহেগনি গাছের পাতা ব্যবহার করলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মেহগনি গাছের পাতার বিশেষভাবে উপকারী। কারণ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের স্তর কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে।
হজমে উন্নতিঃ আমাদের পেটের সমস্যা দূর করে হজম শক্তি বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকেন মেহেগনি গাছের পাতা। এছাড়াও পাচনতন্ত্রের সমস্যা দূর করতে কার্যকরী।
মেহগনি গাছের পাতার অপকারিতা
মেহগনি গাছের পাতার অপকারিতা সম্পর্কে আপনি জানেন কি? মেহগনি গাছের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জেনেছি। মেহগনি গাছের পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। কিন্তু মেহগনি গাছের পাতার অপকারিতা সম্পর্কে জানেন কি? তাহলে জেনে নেওয়া যাক মেহগনি গাছের পাতার অপকারিতা সম্পর্কে।
পানিতে মেহগনি গাছের পাতা পড়লে পানি দূষিত হয়ে পড়ে।
পুকুর পাড়ে মেহেগনি গাছ থাকলে সে গাছের পাতা পানিতে পড়লে পুকুরের মাছ সুস্থ
ভাবে বেঁচে থাকতে পারে না।
মেহগনি গাছে পাখিরা বাসা বাঁধে না। কারণ এই গাছের ফল কোন পাখি খেতে পারে না।
মেহগনি গাছের পাতা মাটিতে পড়লে কীটপতঙ্গ বেঁচে থাকতে পারে না কারণ এই পাতার রসে
ক্ষতিকারক উপাদান রয়েছে।
মেহগনি গাছ অনেক বেশি ক্ষতিকারক হাঁস মুরগির জন্য। হাঁস মুরগি ভালোভাবে পালন করা যায় না মেহগনি গাছের জন্য।
যেখানে মেহেগনি গাছের পাতা পড়ে সেখানের মাটির উপকারী এবং অপকারী দুই ধরনের
গুনাগুন নষ্ট করে দেই।
মেহগনি গাছ জন্মাতে কত সময় লাগে?
মেহগনি গাছের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জেনেছি। মেহগনি গাছের পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে। তাই এখন জানব মেহগনি গাছ জন্মাতে কত সময় লাগে? সাধারণত একটি বৃক্ষ জাতীয় গাছ মেহেগনি। মেহগনি গাছ বড় হতে এবং পরিপক্ক হতে অনেক সময় লেগে যায়। প্রায় ২০ থেকে ২৫ বছর সময় লাগে একটি মেহেগনি গাছ পুরোপুরি পরিপক্ক হতে।
আরো পড়ুনঃ
তারপরে এ গাছের কাঠ ব্যবহারের জন্য উপযোগী হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি
জেলাতে জন্মে থাকে এই মেহগনি গাছ। এই গাছের চাহিদা বিপুল পরিমাণে বাংলাদেশের
রয়েছে। কারণ এ গাছের কাঠের গুনাগুন ভালো হওয়ার জন্য জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই
চলেছে। এছাড়াও এ গাছ অল্প পরিচর্যায় বেড়ে ওঠে তাড়াতাড়ি। এই গাছের কাঠ অনেক
বেশি শক্তিশালী হয় তাই অনেক সৌখিন মানুষ এই গাছের কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি
করে থাকে।
মেহগনি গাছ লাগানোর নিয়ম
মেহগনি গাছ লাগানোর নিয়ম সম্পর্কে জেনে সে নিয়মে গাছ লাগালে গাছ অতি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তাই গাছ লাগানোর পূর্বে গাছ লাগানোর নিয়ম সম্পর্কে পুরোপুরি ভাবে জানতে হবে তারপর গাছ লাগাতে হবে। এই গাছ সেই জায়গাতে লাগাতে হবে যেখানে উষ্ণ আদ্র এবং পরিপূর্ণভাবে সূর্যের তাপ লাগে সেখানে। তাই এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে যেখানে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা সূর্যের তাপ লাগে সেখানে লাগাতে হবে মেহগনি গাছ।
তাহলে এ গাছ অতি দ্রুতই বেড়ে উঠবে, আর এই গাছ ছায়াযুক্ত জায়গায় দ্রুত বড় হতে পারে না। তাই মাটি নির্বাচনের পর মাটিতে ভালোভাবে কম্পোস্ট এবং জৈব সার মিশিয়ে মাটি উর্বর করে নিতে হবে। তাই আপনাকে মনে রাখতে হবে মাটি যত উর্বর হবে গাছ তত বৃদ্ধি পাবে। আর আপনাকে গাছ লাগানোর পূর্বে মনে রাখতে হবে মেহগনি গাছ ভেজা জায়গায় বেড়ে উঠতে পারে না তাই সঠিক জায়গা নির্বাচন করতে হবে। তাহলে সে গাছ দ্রুত বেড়ে উঠবে গাছগুলো শক্তিশালী হবে।
মেহগনি গাছ কত বছর বাঁচে?
আপনি জানেন কি মেহগনি গাছ কত বছর বাঁচে? আপনি জানলে নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। সাধারণত একটি মেহগনি গাছ ৫০থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। তবে এই গাছ উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এবং পরিচর্যা পেলে ১৫০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তাই আপনাকে মনে রাখতে হবে গাছটির বৃদ্ধির হার, জীবন, দশা নির্ভর করে পরিবেশ, জলবায়ু, মাটির গুনাগুন মান এবং সঠিক পরিচর্যার উপর ভিত্তি করে।
শেষকথাঃ মেহেগনি গাছের বীজের উপকারিতা
মেহেগনি গাছের বীজের উপকারিতা কত? আমরা তা আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারলেন। এছাড়াও মেহেগনি গাছের পাতার অপকারিতা এবং এই গাছের ব্যবহার ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে পারলেন। মেহেগনি বীজ আদিকাল থেকে ঔষধ হিসেবে নানা রকম সমস্যা সমাধান করে থাকে। মেহগনি বীজ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা হয়।
মেহগনি গাছের বীজের উপকারিতা, এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য উপকারী এই রোগ গুলো মোকাবেলা করতে মেহগনি বীজ অনেকটা সহায়তা করে থাকে। মেহগনি গাছের কাঠ অত্যন্ত শক্ত, এবং সৌন্দর্য ও স্থায়িত্বের জন্য বিশ্বব্যাপীতে অত্যন্ত মূল্যবান এই গাছ এ গাছ নানা ধরনের কাজে ব্যবহার করে থাকে। আসবাবপত্র নির্মাণের জন্য মেহগনি কাঠ খুবই মজবুত এবং কাজের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এটির আসবাবপত্র পালিশ করলেই চকচকে রং ধরে তাই অনেকেই দামি ফার্নিচার টেবিল আলমারি চেয়ার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত করে থাকে।
সাবিনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url