কলমি শাকের ২০টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সমূহ
কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন। কলমি শাক প্রায় মানুষের পছন্দের একটি খাবার। কলমি শাকের উপকারিতা অনেক কিন্তু এর পাশাপাশি কিছু অপকারিতা ও রয়েছে।
কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই শাক আঁশ জাতীয় একটি খাদ্য। কলমি শাক হজম করতে সাহায্য করে এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
সূচিপত্রঃ কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
- কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
- কলমি শাকের ২০টি উপকারিতা
- কলমি শাক খেলে কি হয়?
- গর্ভাবস্থায় কলমি শাক খাওয়ার উপকারিতা
- কলমি শাকে কি কি ভিটামিন রয়েছে
- কলমি শাকের অপকারিতা সমূহ
- কলমি শাকের ঔষধি গুন
- কলমি শাকের পুষ্টিগুণ সমূহ
- কলমি শাক খাওয়ার নিয়ম
- কলমি শাকের রস খেলে কি হয়
- কলমি শাকের বৈশিষ্ট্য
- কলমি শাক খেলে প্রেসার বাড়ে না কমে
- কলিমা শাক খেলে কি এলার্জি হয়
- শেষকথাঃ কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য প্রায় অধিকাংশ মানুষ ইউটিউবে, ফেসবুকে এবং গুগলে সার্চ করে থাকে। কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই শাক আঁশ জাতীয় একটি খাদ্য। কলমি শাক হজম করতে সাহায্য করে এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখে। এই শাক বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী সবজি। একজন মানুষের ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে থাকে। কলমি শাক রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
আর কলমি শাক ত্বকের সুরক্ষায় এবং মাথাব্যথা দূর করতে সাহায্য করে আর শরীরের প্রদান কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আর কলমি শাক গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই উপকারী শাক। এছাড়াও কলমি শাক হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে এবং প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। তবে কলমি শাকের কিছু অপকারিতাও রয়েছে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে এছাড়াও আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। আবার কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কলমি শাকের ২০টি উপকারিতা
কলমি শাকের উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। সম্পর্কে জানার জন্য খোঁজাখুঁজি করেন ইন্টারনেট, ইউটিউব এবং ফেসবুক। কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই শাক আঁশ জাতীয় একটি খাদ্য। তাহলে জেনে নেওয়া যাক কলমি শাকের উপকারিতা সম্পর্কে।
1.ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ কলমি শাক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারে একদিন
সবজি। কারণ এবং কার্বোহাইড্রেট। যা ডায়াবেটিস ব্যক্তির ক্যালরি নিয়ন্ত্রণে
সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা কলমি শাক খেতে পারেন।
2.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ কলমি শাকের রয়েছে ভিটামিন সি এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা আপনাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য
করে। আর শরীরের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ লাউ শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
3.পাচন শক্তি উন্নত করেঃ আপনাদের পাচন শক্তির উন্নত করতে সাহায্য করে কলমি
শাক। কারণ কলমি শাকে রয়েছে ফাইবার এবং আন্টিসেপটিক। এছাড়াও পেটের
অন্যান্য সমস্যা সমাধানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
4.হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ কলমি শাকে রয়েছে আঁশ, যা হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। আপনাদের যাদের সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই কলমি শাক খেতে পারেন।
5.রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করেঃ এটি প্রাকৃতিকভাবে রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং রক্তে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে।
6.চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারোটিন থাকায় এটি চোখের জন্য উপকারী ও রাতকানা প্রতিরোধে কার্যকর। তাই আপনাদের যাদের ভিটামিন এ এর অভাব রয়েছে তারা অবশ্যই কলমি শাক খাবেন। কারণ আপনার ভিটামিন এর অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে।
7.লিভারের জন্য কার্যকরীঃ কলমি শাক একটি গুরুত্বপূর্ণ সবজি। যা লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে এবং লিভারকে টক্সিন থেকে রক্ষা করে।
8.ঘুমের সমস্যা দূর করতেঃ কলমি শাক ঘুমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। কলমি
শাকে স্নায়ু শান্ত রাখার উপাদান আছে যা আপনাদের অনিদ্রা দূর করতে এবং ভালো
ঘুম হতে সাহায্য করে থাকে।
9.চর্মরোগের চিকিৎসায়ঃ কলমি শাক চর্মরোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বকে অ্যালার্জি একজিমার মত সমস্যা এবং ফুসকুড়ি দূর করতে সাহায্য করে।
10.ওজন নিয়ন্ত্রণেঃ কলমি শাকে রয়েছে ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকায় পেট দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখতে সাহায্য করে যা ওজন কমাতে সহায়তা করে।
11.হাড় ও দাঁত মজবুতেঃ কলমি শাকে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস যা হাড় ও দাঁত শক্ত করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কলমি শাক খাওয়া সবার প্রয়োজন।
12.প্রাকৃতিক মলমেঃ চোট বা কেটে গেলে কলমি শাক বেটে ক্ষতস্থানে লাগালে প্রদাহ কমায় এবং দ্রুত আরাম দেয়। আর ক্ষতস্থান শুকাতে কলমি শাক সাহায্য করে।
13.ত্বক ও চুলের যত্নেঃ কলমি শাকে রয়েছে ভিটামিন সি ও আয়রন ত্বক উজ্জ্বল করতে এবং চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করে।
14.জলবাহিত রোগ প্রতিরোধেঃ কলমি শাকে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ডায়রিয়া, আমাশয়, কলেরা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।
15.উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ কলমি শাকে পটাশিয়াম থাকার কারণে এটি রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে, হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
16.রোদ প্রতিরোধে প্রাকৃতিক টনিকঃ দীর্ঘমেয়াদি দুর্বলতা বা রোগের পর শরীর পুনরুদ্ধারে সহায়ক একটি প্রাকৃতিক টনিক হিসেবেও কাজ করে।
17.জ্বর সর্দি ও কাশি কমায়ঃ প্রাকৃতিক ঔষধি গুণ থাকায় কলমি শাক জ্বর বা ঠান্ডা-কাশির উপশমে কার্যকর।
18.মূত্রবর্ধক হিসাবে কাজ করেঃ প্রাকৃতিক ডিউরেটিক হওয়ায় এটি প্রস্রাব পরিষ্কার করে এবং ইউরিনারি ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়তা করে।
19.মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়ঃ ফলিক অ্যাসিড ও অন্যান্য খনিজ উপাদান মস্তিষ্কের কোষের বিকাশে সহায়তা করে।
20.আয়রনের উৎসঃ এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে, যা রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে।
কলমি শাক খেলে কি হয়?
কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা, আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন যে কলমি শাক খেলে কি হয়। তাহলে জেনে নেওয়া যাক কলমি শাক খাওয়ার সম্পর্কে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ কলমি শাকের রয়েছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা আপনাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর শরীরের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
- চর্মরোগের চিকিৎসায়ঃ কলমি শাক চর্মরোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বকে অ্যালার্জি একজিমার মত সমস্যা এবং ফুসকুড়ি দূর করতে সাহায্য করে।
- চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারোটিন থাকায় এটি চোখের জন্য উপকারী ও রাতকানা প্রতিরোধে কার্যকর। তাই আপনাদের যাদের ভিটামিন এ এর অভাব রয়েছে তারা অবশ্যই কলমি শাক খাবেন। কারণ আপনার ভিটামিন এর অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ কলমি শাকে রয়েছে আঁশ, যা হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। আপনাদের যাদের সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই কলমি শাক খেতে পারেন।
- রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করেঃ এটি প্রাকৃতিকভাবে রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং রক্তে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে।
- হাড় ও দাঁত মজবুতেঃ কলমি শাকে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস যা হাড় ও দাঁত শক্ত করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কলমি শাক খাওয়া সবার প্রয়োজন।
- লিভারের জন্য কার্যকরীঃ কলমি শাক একটি গুরুত্বপূর্ণ সবজি। যা লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে এবং লিভারকে টক্সিন থেকে রক্ষা করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণেঃ কলমি শাকে রয়েছে ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকায় পেট দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখতে সাহায্য করে যা ওজন কমাতে সহায়তা করে।
- জ্বর ও ঠান্ডায় উপকারীঃ জ্বর ও ঠান্ডায় উপকারী আয়ুর্বেদ মতে, কলমি শাক সর্দি-কাশিতে আরাম দিতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় কলমি শাক খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী নারীর জন্য কলমি শাক একটি কার্যকরী উপাদান। যা গর্ভবতী
নারীদের নানারকম সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে। এই কথা অনেকেরই অজানা। তাহলে
জেনে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় খাবার উপকারিতা সম্পর্কে।
- প্রাকৃতিক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধঃ এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং গর্ভকালীন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
- চোখে ও ত্বকের যত্নে ভালোঃ কলমি শাকে থাকা বিটা-ক্যারোটিন (ভিটামিন-এ) গর্ভবতী নারীর চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
- আয়রনের চাহিদা পূরণেঃ গর্ভাবস্থায় রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, তাই আয়রনের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়। কলমি শাকে প্রচুর আয়রন থাকে যা রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া) প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করেঃগর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা। কলমি শাকে থাকা উচ্চ মাত্রার আঁশ হজম প্রক্রিয়া সহজ করে এবং মলত্যাগ স্বাভাবিক রাখে।
- শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করেঃ এই শাক দেহে ঠান্ডা ভাব তৈরি করে এবং পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করে। গ্রীষ্মকালে গর্ভবতীদের জন্য এটি বেশ উপকারী।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ কলমি শাকে পটাসিয়াম থাকে যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কলমি শাকে কি কি ভিটামিন রয়েছে
1.ভিটামিন এঃ কলমি শাকে রয়েছে ভিটামিন এ যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে, ত্বক ও হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
2.ভিটামিন সিঃ কলমি শাকে রয়েছে ভিটামিন সি যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে, ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে এবং আয়রনের শোষণ বাড়িয়ে রক্তস্বল্পতা দূর করে।
আরো পড়ুনঃ কিসমিস খেলে কি ফর্সা হয়
3.ভিটামিন বি ১ঃ কলমি শাক রয়েছে ভিটামিন বি ১ যা আমাদের শরীরের জন্য কার্যকরী উপাদান। কলমি শাক স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা ঠিক রাখে, হৃৎপিণ্ড ও পেশির কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং খাবারকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে।
4.ভিটামিন বি ২ঃ কলমি শাক রয়েছে ভিটামিন বি ২ যা আমাদের শরীরের জন্য কার্যকরী উপাদান। কলমি শাক কোষের বৃদ্ধি ও উন্নয়ন সাধনে গুরুত্বপূর্ণ, চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে, চুল ও ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
5.ভিটামিন বি ৩ঃ কলমি শাক রয়েছে ভিটামিন বি ৩ যা আমাদের শরীরের জন্য কার্যকরী উপাদান। কলমি শাক হজম শক্তি বৃদ্ধি করে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে, স্নায়ুবিক কার্যক্রম উন্নত করে, ত্বককে রুক্ষ ও শুষ্ক হওয়া থেকে রক্ষা করে।
6.ফলেটঃ কলমি শাকে রয়েছে ফলেট যা একজন গর্ভবতী নারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। থাকে শিশুর মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ড বিকাশে সহায়তা করে, রক্তে লোহিত কণিকা তৈরিতে সাহায্য করে এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে কার্যকর।
7.ভিটামিন ইঃ কলমি শাকে রয়েছে ভিটামিন ই যা আমাদের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, কোষকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বাড়ায় বার্ধক্য প্রতিরোধে সাহায্য করে।
কলমি শাকের অপকারিতা সমূহ
- হজমে সমস্যাঃ কলমি শাকে থাকা উচ্চমাত্রার আঁশ এবং কিছু নির্দিষ্ট উপাদান অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং গ্যাস বৃদ্ধি ও ডায়রিয়া হতে পারে।
- গর্ভবতী নারীদের জন্য সমস্যাঃ গর্ভবতী নারীদের জন্য কলমি শাক কখনো কখনো বমি বমি ভাব সৃষ্টি হতে পারে।সৃষ্টি করতে পারে। তাই পরিমিত মাত্রায় খাওয়া উত্তম এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- এলার্জির সমস্যাঃ অনেকের ক্ষেত্রে কলমি শাক খাওয়ার পর ত্বকে চুলকানি, র্যাশ বা অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এটি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে।
- রক্তে শর্করা মাত্রা কমিয়ে দেয়ঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছুটা উপকারী হলেও যারা রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার প্রবণতায় ভোগেন, তাদের জন্য কলমি শাক অতিরিক্ত খেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে।
- বিষাক্ত কীটনাশক অংশবিশেষঃ বাজারে পাওয়া অনেক কলমি শাকেই অতিরিক্ত পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। ভালোভাবে ধুয়ে না খেলে এই বিষাক্ত উপাদান শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন জটিল রোগের সৃষ্টি করতে পারে।
- কিডনি রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণঃ কলমি শাকে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে, যা কিডনি রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। অতিরিক্ত পটাশিয়াম কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
- আলসারের সমস্যাঃ যাদের পাকস্থলীতে আলসার আছে, তারা যদি নিয়মিত কলমি শাক খান, তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
কলমি শাকের ঔষধি গুন
- জ্বর ও ইনফ্লামেশন সমস্যা দূর করেঃ কলমি শাকে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকে, যা জ্বর, অস্থিসন্ধির ব্যথা ও ফোলা কমাতে সাহায্য করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
- কব্জি ও হাঁটু ব্যথা কমাতে সাহায্য করেঃ কলমি শাক নিয়মিত খেলে বাতের ব্যথা বা জয়েন্ট পেইনের উপশম হয়।
- ডায়রিয়া ও আমাশয় রোগের উপকারীঃ কলমি শাকের পাতার রস ডায়রিয়া ও আমাশয় রোগে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
- চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারোটিন থাকায় এটি চোখের জন্য উপকারী ও রাতকানা প্রতিরোধে কার্যকর। তাই আপনাদের যাদের ভিটামিন এ এর অভাব রয়েছে তারা অবশ্যই কলমি শাক খাবেন। কারণ আপনার ভিটামিন এর অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে।
- লিভারের জন্য কার্যকরীঃ কলমি শাক একটি গুরুত্বপূর্ণ সবজি। যা লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে এবং লিভারকে টক্সিন থেকে রক্ষা করে।
- ঘুমের সমস্যা দূর করতেঃ কলমি শাক ঘুমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। কলমি শাকে স্নায়ু শান্ত রাখার উপাদান আছে যা আপনাদের অনিদ্রা দূর করতে এবং ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে থাকে।
কলমি শাকের পুষ্টিগুণ সমূহ
কলমি শাক একটি জনপ্রিয় ও সহজলভ্য সবজি যা পুষ্টিগুণে ভরপুর। এটি আমাদের শরীরের নানা ধরনের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে এবং স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। নিচে কলমি শাকের প্রধান পুষ্টিগুণসমূহ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলোঃ
1.ভিটামিনে ভরপুরঃ কলমি শাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি১ থাকে চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে, অন্ধত্ব রোধে সহায়তা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ত্বক সুন্দর রাখে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। স্নায়ুতন্ত্রের জন্য উপকারী, শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।
2.আইরন ও ক্যালসিয়ামঃ কলমি শাক রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে। আর দাঁত ও হাড় মজবুত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
3.অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকেঃ কলমি শাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকা উপাদান (যেমন ফ্ল্যাভোনয়েড, বিটা-ক্যারোটিন) শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে, বার্ধক্য ধীর করে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
4.ডায়োটারি ও ফাইবারে সমৃদ্ধঃ কলমি শাকে ফাইবার বা আঁশ হজমে সহায়তা করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পরিপাকতন্ত্রকে সচল রাখে।
5.ক্যালোরি ও ফ্যাট কমঃ এটি ক্যালোরি ও ফ্যাট কম হওয়ায় ওজন কমাতে সাহায্য করে। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের জন্য উপযুক্ত একটি খাবার।
6.ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম থাকেঃ কলমি শাক পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে, হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
7.জিংক ও ফসফরাসঃ কলমি শাক শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করে এবং ত্বক, চুল ও হাড়ের জন্য উপকারী।
কলমি শাক খাওয়ার নিয়ম
কলমি শাক বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় সবজি ও শাক। এটি পুষ্টিকর ও ঔষধিগুণে ভরপুর। তবে সঠিকভাবে খাওয়ার নিয়ম না জানলে এর পুরো উপকার পাওয়া যায় না। নিচে কলমি শাক খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলোঃ কলমি শাক সাধারণত জলাভূমি, ডোবা, খালবিল কিংবা স্যাঁতসেঁতে জায়গায় জন্মে, তাই এতে মাটি, কাদা, পোকা-মাকড়, কিংবা পরজীবী থাকতে পারে। ভালোভাবে ধুয়ে, কয়েকবার পানি বদলে পরিষ্কার করে তারপর রান্না বা ব্যবহার করা উচিত। কিছুক্ষণ লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখলে জীবাণু বা কিটপতঙ্গ দূর হয়। তারপরে কলমি শাক সেদ্ধ, ভাজি বা ভর্তা হিসেবে খাওয়া যায়। অল্প তেলে, কম মশলায় রান্না করাই ভালো, যাতে শাকের পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। খুব বেশি না রান্না করে হালকা গরমে রান্না করা উচিত, যাতে ভিটামিন ও খনিজ নষ্ট না হয়।
আরো পড়ুনঃ মেথি ও কালোজিরা দিয়ে চুলের যত্ন
কলমি শাকে আঁশ বেশি থাকায় এটি হজমে সাহায্য করলেও খালি পেটে খেলে গ্যাস্ট্রিক বা অম্বলের সমস্যা হতে পারে। ভাত বা অন্যান্য খাবারের সঙ্গে খাওয়াই উত্তম। অতিরিক্ত খেলে বমি ভাব, পেট ফাঁপা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ৭০–১০০ গ্রাম কলমি শাক খেতে পারেন। প্রতিদিন খাওয়ার পরিবর্তে সপ্তাহে ২-৩ দিন খাওয়া যথেষ্ট। অন্যান্য শাক ও সবজির সঙ্গে পরিবর্তন করে খেলে শরীরের জন্য বেশি উপকারী হয়। দুপুরে বা দুপুরের খাবারের সময় কলমি শাক খাওয়া ভালো। কারণ এই সময় হজম শক্তি তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। রাতে খেলে কিছু ক্ষেত্রে হজমের সমস্যা হতে পারে।
কলমি শাকের রস খেলে কি হয়
কলমি শাক একটি পুষ্টিকর ও ঔষধিগুণে ভরপুর শাক। এর কাঁচা রসও বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য বহু প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদ ও দেশি চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
- কব্জি ও গেট ব্যথায় উপকারীঃ কলমি শাকের রস প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানসমৃদ্ধ হওয়ায় এটি শরীরের বিভিন্ন ব্যথা উপশমে সাহায্য করে, বিশেষ করে গাঁটে গাঁটে ব্যথা বা গেঁটে বাতে এটি উপকারী।
- পেট ঠান্ডা রাখে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ কলমি শাকের রসে থাকা আঁশ ও পানি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন, তাদের জন্য এটি খুবই উপকারী।
- লিভার সুস্থ রাখেঃ কলমি শাক প্রাকৃতিকভাবে লিভার ডিটক্স করতে কলমি শাকের রস সহায়ক। এটি লিভারকে ক্ষতিকর টক্সিন থেকে রক্ষা করে এবং কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- চোখের জন্য উপকারীঃ কলমি শাকে থাকা ভিটামিন এ ও বিটা-ক্যারোটিন চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। এর রস নিয়মিত পান করলে চোখের ক্লান্তি ও শুষ্কতা কমে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ কলমি শাক এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে বলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে।
- ত্বক ভালো রাখে এবং ব্রণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করেঃ কলমি শাকের রসে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান থাকায় এটি ত্বকের ফ্রি র্যাডিকেল দূর করে এবং ব্রণ, দাগ-ছোপ প্রতিরোধ করে।
- ঘুমের সমস্যা দূর করেঃ কলমি শাকের রসে থাকা নির্দিষ্ট কিছু উপাদান স্নায়ুকে শিথিল করে ও ঘুমের গুণগত মান উন্নত করে। অনিদ্রা বা ঘুমজনিত সমস্যা থাকলে এটি সহায়ক।
- বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করেঃ খাওয়ার পর অতিরিক্ত অম্বল বা বমিভাব হলে কলমি শাকের কাঁচা রস ১-২ চামচ পান করলে দ্রুত উপশম হতে পারে।
কলমি শাকের বৈশিষ্ট্য
কলমি শাক একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর সবুজ শাক যা দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড এবং চীন সহ অনেক দেশে জনপ্রিয়। এটি মূলত পানিতে বা আর্দ্র মাটিতে জন্মায়। নিচে কলমি শাকের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কলমি শাক একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এটি গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে খুব সহজে জন্মে এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায়।মূলত জলাভূমি, খাল, বিল, ধানক্ষেত বা আর্দ্র জায়গায় এটি ভালোভাবে জন্মে। কখনো কখনো ভাসমান অবস্থায়ও দেখা যায়। পাতাগুলো সরু ও কিছুটা লম্বাটে। ডাঁটা (পাতার কাণ্ড) ফাঁপা এবং ভঙ্গুর ধরনের, যা রান্নার পরে নরম হয়ে যায়। এটি ভাজি, ভর্তা, ভুনা, ঝোল ইত্যাদি রান্নায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।অনেকেই কলমি শাক কাঁচা বা অল্প সিদ্ধ করে খেয়ে থাকেন। কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, সি, ও ফাইবার।
এটি রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়ক, হজমে সহায়তা করে, ও চোখের জন্য উপকারী। এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য, অম্লতা ও পেটের গ্যাস দূর করতে সাহায্য করে। কলমি শাকের রস পোকামাকড় কামড় দিলে বা ত্বকের চুলকানি হলে লাগানো হয়। কলমি শাক খুব সহজে বাড়ির পাশে, পুকুরের ধারে বা বাগানে চাষ করা যায়। অল্প খরচে বেশি উৎপাদন সম্ভব। এটি মাটি ও পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। অনেক সময় এটি পশুখাদ্য হিসেবেও ব্যবহার হয়।
কলমি শাক খেলে প্রেসার বাড়ে না কমে
আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন কলিম শাক খেলে প্রেসার বাড়ে না কমে। এগুলো জানার জন্য আপনারা অনেকে ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করেন। তাহলে জেনে নেওয়া যাক কলমি শাক খেলে প্রেসার বাড়ে না কমে সেসব সম্পর্কে। কলমি শাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, যা শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম বের করতে সাহায্য করে। সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়ানোর জন্য দায়ী, তাই পটাশিয়াম প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
আর এতে থাকা ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও রক্তনালিকে সচল রাখতে সহায়তা করে, যা রক্তচাপ কমানোর সঙ্গে সম্পর্কিত। কলমি শাক প্রাকৃতিকভাবে খুব কম সোডিয়ামযুক্ত, তাই এটি উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য নিরাপদ খাবার। তবে অতিরিক্ত তেল লবণ ঝাল দিয়ে রান্না করে খাওয়া উচিত নয়। আর কিডনি রোগীদের জন্য কলমি শাক ঝুঁকিপূর্ণ কারণ যেন বেশি পরিমাণ পটাশিয়াম গ্রহণ না করেন সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।
কলিমা শাক খেলে কি এলার্জি হয়
কলমি শাক একটি জনপ্রিয় শাকসবজি যা পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে কিছু মানুষের শরীরে এটি খাওয়ার পর এলার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যদিও এটি খুব সাধারণ নয়, তবুও কারো কারো ক্ষেত্রে এলার্জির সম্ভাবনা থাকে। তাহলে জেনে নেয়া যাক কলমি শাক খেলে এলার্জি হওয়ার কারণগুলো।
যদি কারো দেহে কলমি শাকের প্রতি সংবেদনশীলতা থাকে, তাহলে চুলকানি র্যাশ (লালচে ফুসকুড়ি) ফোস্কা বা চামড়ায় ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। আর শ্বাস প্রশ্বাসের কষ্ট হতে পারে যেমন ধরেন হাঁচি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, গলা খুসখুস করা, কাশি বা ঘন ঘন কাশির প্রবণতা। পাকস্থলী সমস্যার জন্য বমিভাব বা বমি, পেট ব্যথা ও ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হতে পারে।
এছাড়াও শরীরে ফুলে যাওয়া (বিশেষ করে মুখ, জিভ বা গলা), রক্তচাপ দ্রুত কমে যাওয়া এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল বা কিছু নির্দিষ্ট উদ্ভিদের প্রতি এলার্জি আছে, তাদের মধ্যে কলমি শাকেও প্রতিক্রিয়া হতে পারে। যদি কলমি শাক চাষের সময় অতিরিক্ত সার, কীটনাশক বা বিষাক্ত পানি ব্যবহার করা হয়, তাহলে তা খেলে অ্যালার্জি হতে পারে। ভালোভাবে না ধুয়ে খেলে মাটি, ধূলিকণা বা জীবাণু থেকেও এলার্জি হতে পারে।
শেষকথাঃ কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
পরিশেষে বলা যায় যে, কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এতক্ষণ পরে জানতে পারলেন। কলমি শাক ত্বকের সুরক্ষায় এবং মাথাব্যথা দূর করতে সাহায্য করে আর শরীরের প্রদান কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারোটিন থাকায় এটি চোখের জন্য উপকারী ও রাতকানা প্রতিরোধে কার্যকর। তাই আপনাদের যাদের ভিটামিন এ এর অভাব রয়েছে তারা অবশ্যই কলমি শাক খাবেন।
কারণ আপনার ভিটামিন এর অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। আর কলমি শাক গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই উপকারী শাক। এছাড়াও কলমি শাক হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে এবং প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। তবে কলমি শাকের কিছু অপকারিতাও রয়েছে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে এছাড়াও আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। আবার কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। কলমি-শাকের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা
সাবিনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url