জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা ও স্টুডেন্ট ভিসার খরচ

 জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চান। আজকের এ আর্টিকেলে জানতে পারবেন জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতার ব্যাপারে। আমাদের অনেকেরই উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে। 

জার্মানিতে-স্টুডেন্ট-ভিসার-যোগ্যতা

আমাদের মাঝে অনেকেই স্বপ্ন দেখে বিদেশে গিয়ে লেখা পড়া করে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য তাই অনেকের কাছে জার্মান একটি স্বপ্নের দেশের মতো। তাই এই স্বপ্নের দেশের স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা সম্পর্কে জানা যাক। 

সূচিপত্রঃ জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা

জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা

জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা, অনেক শিক্ষার্থী এই দেশে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য যেতে চাই উন্নত মানের শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে এই দেশে আসে। ইউরোপের এ উন্নত দেশে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে ভিসা প্রয়োজন। জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য অবশ্যই শিক্ষার্থীর যোগ্যতা থাকতে হবে। 

তাই আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবেন জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার প্রসেসিং, যোগ্যতা, খরচ, এ ভিসা নিতে কত সময় লাগে এই সকল বিষয়ে জানতে পারবেন। এছাড়াও কি কি কাগজপত্র লাগবে স্টুডেন্ট ভিসায় কয় ভাবে পাওয়া যায় এসব সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই এখন জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা সম্পর্কে জানা যাক।

  • সর্বনিম্ন ৩ থাকতে হবে মাস্টার্স প্রোগ্রাম এর জন্য 
  • আন্ডার গ্রাজুয়েট ডিগ্রির জন্য এসএসসি এবং এইচ এস সি তে সর্বনিম্ন ৩. ৫ থাকতে হবে
  • বৈধ পাসপোর্ট 
  • স্টাডি পরিকল্পনা 
  • ব্লক মানি 
  • ভিসা আবেদন ফি 
  • একাডেমিক সার্টিফিকেট 
  • এডমিশন লেটার 
  • ভাষা দক্ষতা সার্টিফিকেট 
  • একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট 
  • স্বাস্থ্য বীমা 
  • মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট 
  • জাতীয় পরিচয় পত্র 
  • ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন 
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
  • ফাইন্যান্সিয়াল সলভেন্সি ডকুমেন্ট 

জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং সম্পর্কে

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হয় জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার পূর্বে। স্টুডেন্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের চেকলিস্ট একবার দেখে নিতে পারেন জার্মানি ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট ভিজিট করেন। জার্মানির স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া অনেকটাই তুলনামূলক কঠিন। কারণ শিক্ষার্থীদের একাউন্টে বড় পরিমাণ টাকার ব্লক মানি হিসেবে দেখাতে হয় এ ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করার জন্য। জার্মানিতে ভিসা পাওয়া কিছুটা কঠিন এর কারণ হচ্ছে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া দীর্ঘকালীন ও জটিল। 

আরো পড়ুনঃ IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায়

তাই জার্মানির স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা থাকলে নিজে কাগজপত্র নিয়ে ঢাকা দূতাবাসে আবেদন করতে পারেন অনলাইনের মাধ্যমে। আবেদন করার পরে চেকলিস্ট অনুযায়ী প্রতিটি কাগজ দুই সেট করে ফটোকপি করে নিজের কাছে রাখবেন। আর অবশ্যই আবেদন করার সময় আবেদন ফি জমা দিতে হবে। কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলে ৪০ দিনের মধ্যে অথবা তিন মাসের মধ্যে জার্মানি ভিসা পেয়ে যাবেন। জার্মানিতে যাওয়ার পর কিছু ইনফরমেশন ভেরিফিকেশন করলে এক থেকে দুই বছর বাড়িয়ে দেওয়া যায়। 

জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত?

বর্তমানে জার্মানি যেতে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা লাগে। এই ভিসার খরচের মধ্যে রয়েছে  বিমান টিকেট বুকিং, এজেন্সি ফি, ভিসা আবেদন ফি, স্বাস্থ্য বীমা, সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন ইত্যাদি। 

জার্মানি ব্যাংকে শিক্ষার্থীদের বড় একটা এমাউন্ট ব্লক মানি জমা দিতে হয়। আর কেউ যদি জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা নিজে নিজে প্রসেসিং করে তাহলে তার ভিসা খরচ অনেকটা কম হবে। এজেন্সি দিয়ে প্রসেসিং করলে তুলনামূলক খরচ অনেক বেশি হবে এই স্টুডেন্ট ভিসায়। 

আরো পড়ুনঃ  দ্রুত সময়ে কোটি টাকা আয়

জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং করতে কত সময় লাগে?

৪০ দিন থেকে ৩ মাস জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং করতে সময় লাগে।

জার্মানিতে যেতে শিক্ষার্থীদের কত টাকা ব্লক মানে লাগে? 

জার্মানিতে শিক্ষার্থীদের স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য একটি ব্লক একাউন্ট এর কিছু পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। এর পরিমাণ হচ্ছে ১১,৯০৪ ইউরো যা বাংলাদেশে অনুযায়ী ১৫ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা। এ টাকা জমা নেওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছ আপনার পড়াশোনা সময় জীবনযাত্রার খরচ চালানোর জন্য যথেষ্ট কিনা সেজন্য।

জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন ফি কত?

ভিসা আবেদন ফি ৭৫ ইউরো লাগে জার্মানিতে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে শিক্ষার্থীদের। 

জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের নিয়ম

বিদেশি শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা দিয়ে থাকে জার্মান সরকার। যারা বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করতে চান তারা স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে পারেন জার্মানের। আর আপনি যে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছেন তাদের দেওয়া এডমিশন লেটার হাতে থাকতে হবে। আর্থিক সমর্থর প্রমাণ থাকতে হবে পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য। জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পড়াশোনা পাশাপাশি ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। 

এই স্টুডেন্ট ভিসা পেতে ৩০ দিন সময় লাগে আর এই ভিসার মেয়াদ মাত্র ৩ মাস। তিন মাস পর এই বিচার বৈধতা হারাবে। আর যদি সেখানে বেশিদিন শিক্ষা অর্জনের জন্য থাকতে চান তাহলে আলাদাভাবে রেসিডেন্স পারমিট এর জন্য আবেদন করতে হবে।এরপরে সে শিক্ষার নির্ধারিত সময় শেষ হবার পর চাকরি খোঁজার জন্য রেসিডেন্স পারমিতে উল্লেখিত নির্দিষ্ট সময় জার্মানিতে অবস্থান করা যাবে। তারপরে চাকরি হয়ে গেলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে।

জার্মানিতে আপনি তিন ধরনের স্টুডেন্ট ভিসায় আসতে পারেন

আপনি জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসায় আবেদন করার জন্য মূলত তিন ধরনের ভিসার বিকল্প পেতে পারেন। এতিম ধরনের ভিসা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

স্টুডেন্ট অ্যাপ্লিক্যান্ট ভিসা (Visum zur Studienbewerbung) স্টুডেন্ট অ্যাপ্লিক্যান্ট ভিসা জার্মানিতে আসতে চান তারা অবশ্যই প্রথমে ল্যাংগুয়েজ কোর্স করে পরে জার্মান ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবেন। এই স্টাডি B2 সম্পূর্ণ করার পরে একটি পরীক্ষা নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ নাম্বার থাকার পর মেন কোর্সে  স্টাডি করতে পারবেন। আর কোন কাজের অনুমতি পাবেন না আপনি এই ভিসায়।

স্টুডেন্টস ভিসা (Fix term Language course) এই স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ ৩ থেকে ৬ মাস থাকে। স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ ফিক্সড করে দেওয়া হয়, এতে কোন কাজের অনুমতি পাবেন না।

স্টুডেন্ট ভিসা (Student Visum)  এই স্টুডেন্ট ভিসায় সরাসরি ইউনিভার্সিটিতে স্বাভাবিকভাবে ভর্তি হয়ে  আসে। আপনি এই স্টুডেন্ট ভিসায় জার্মানিতে আসলে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন কাদের ক্ষেত্রে আপনার কোন সমস্যা হবে না তাই আপনারা চেষ্টা করবেন যেন সরাসরি ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হয়ে জার্মানিতে আসতে পারেন।

টিউশন ফি এবং অন্যান্য খরচ

জার্মানিতে উচ্চ শিক্ষার্থে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো ধরনের টিউশন ফি এবং অন্যান্য খরচ লাগে না। তবে যারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে তাদের প্রতি সেমিস্টারে ১৫০ থেকে ৪০০ ইউরো খরচ দিতে হবে। আরো দিতে হবে খাওয়া, থাকা, বই পত্র অন্যান্য খরচে ৬০০ থেকে ৭ ০০ ইউরো খরচ দিতে হবে। তবে জার্মানিতে বিদেশে শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিবছর 120 পূর্ণ দিবস বা ২৪০ অর্ধদিবস পার্ট টাইম জবের অনুমতি দেওয়া হয়। 

আরো পড়ুনঃ 

আপনি যদি জার্মানি ভাষায় দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে পার্ট টাইম জব করে খুব সহজে সেমিস্টার ফি এবং অন্যান্য খরচ চালাতে পারবেন। এছাড়াও আপনি পড়াশোনা শেষে ১.৫ বছরের পর জব সার্চ ভিসা পাবেন। জার্মানিতে বৈধভাবে একটানা পাঁচ বছর থাকার পর স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর বসবাসের ৮ বছর পর সে দেশের নাগরিকত্ব লাভের আবেদন করতে পারবেন।   

মন্তব্যঃ জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা

পরিশেষে বলা যায় যে, আজকের এই আর্টিকেলে জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করার নিয়ম, কয় রকম স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যায়, ব্লক মানির অ্যাকাউন্ট, খরচ কত সে সম্পর্কে জানতে পারলেন। আর নিজে জেনেশুনে জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা অনলাইন করার নিয়ম। এছাড়াও এজেন্সিতে যোগাযোগ করে জার্মানির স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যায়।

জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা তবে এজেন্সিতে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনে অনেক সময় প্রতারিত হতে পারেন। তাই আমার মতে অভিজ্ঞতা থেকে বলছি এজেন্সির সহযোগিতা ছাড়াই আপনার এই স্টুডেন্ট ভিসা নিজেরাই আবেদন করতে পারবেন। তাই জেনে বুঝে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করবেন।                  


                                                                                                                                                               





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাবিনা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url